Home » অনলাইন ইনকাম » মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে কিভাবে আয় করা যায়?

মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে কিভাবে আয় করা যায়?

একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে কিভাবে আয় করা যায় (How to make play store apps and earn money) এ বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন?

যদি হ্যাঁ, তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ, এন্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপস তৈরি করে ইনকাম করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করতে চলেছি।

মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে কিভাবে আয় করা যায়
এন্ড্রয়েড অ্যাপ বানিয়ে কিভাবে টাকা আয় করবেন?

একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে টাকা আয় করার যেমন নানা ধরনের পদ্ধতি রয়েছে, তেমনি এন্ড্রয়েড অ্যাপ তৈরি করে আয় করারও বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি বা মনিটাইজেশন সিস্টেম রয়েছে।

যদিও বর্তমানে ঘরে বসে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার অনেক সহজ উপায় রয়েছে। এরকম বেশ কিছু উপায় রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে লোকেরা অনলাইনে দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করে নিতে পারেন।

কিন্তু এগুলোর মধ্যে এপস তৈরি করে ইনকাম করাটা অধিক লাভজনক একটি উপায় হিসেবে প্রমাণিত৷ কেননা আপনি যদি একটি এন্ড্রয়েড অ্যাপ তৈরি করে সেটার জনপ্রিয়তা অত্যধিক হারে বৃদ্ধি করতে পারেন, তাহলে আপনি অনায়াসেই প্রতিদিন ১০০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

আর একবার আপনার বানানো অ্যাপ জনপ্রিয়তা অর্জন করলে আপনি কোনো কাজ না করেই বসে বসে সেখান অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

তাহলে চলুন কিভাবে মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে আয় করা যায় এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিই।

অ্যাপ বানিয়ে কি আয় করা যায় এবং এর জন্য কী দক্ষতা থাকতে হবে?

আজকাল স্টুডেন্ট থেকে শুরু করে প্রাপ্ত বয়স্ক সকলেই স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন। আর স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সকলেই তাদের এন্ড্রয়েড স্মার্টফোনে প্রতিনিয়ত নিজেদের প্রয়োজনীয় অ্যাপস বা এপ্লিকেশনগুলো ব্যবহার করছেন৷

যেমন ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা রিলেটেড android app গুলো প্রতিদিন ব্যবহার করে থাকেন।

আর আমাদের যেকোনো প্রয়োজনে যখন কোনো একটি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করি তখন নির্দিষ্ট কিছু সময়ের ব্যবধানে বেশ কিছু বিজ্ঞাপন বা advertisements আমাদের সামনে আসে।

ব্যবহারকারীদের এই বিজ্ঞাপনগুলো দেখানোর বিনিময়ে অ্যাপসের মালিক টাকা ইনকাম করে থাকেন।

তাহলে আপনার বানানো অ্যাপের যত বেশি সংখ্যক বেশি সংখ্যক ইউজার থাকবে, দেখানো বিজ্ঞাপনগুলোতে তত বেশি পরিমাণে ভিউস হবে এবং আপনার ইনকামও প্রচুর হতে থাকবে।

আপনি যদি নিজের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ বানিয়ে টাকা ইনকাম করার কথা ভাবছেন, তাহলে কোনো চিন্তা করবেন না।

কারণ, বর্তমানে অ্যাপ তৈরি করার জন্য আপনাকে একজন app developer হতে হবে না এবং বিভিন্ন programming language ও জানতে হবে না।

আপনার ইন্টারনেট ব্যবহারের সাধারণ দক্ষতা থাকলেই আপনি খুব সহজেই নিজের একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ তৈরি করে নিতে পারবেন।

কিভাবে নিজের একটি এন্ড্রয়েড অ্যাপ তৈরি করবেন?

যদি আপনি মোবাইল অ্যাপস তৈরি করে ইনকাম করার কথা ভাবছেন, তাহলে সবচেয়ে প্রথমে আপনাকে একটি mobile app তৈরি করে নিতে হবে৷

আর এখনকার সময়ে একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করা খুব কঠিন কোনো বিষয় নয়। এমনকি আপনি চাইলে মোবাইল দিয়েই app তৈরি করতে পারবেন।

তাহলে আপনি যদি ভাবছেন যে অ্যাপ কিভাবে তৈরি করবেন তাহলে আপনার কোনো চিন্তা করার দরকার নাই।

আপনি ইউটিউবে Android app making এর বিষয়ে প্রচুর video tutorial আপনি পেয়ে যাবেন যেগুলোর মাধ্যমে নিজেই একটি mobile app বানিয়ে নিতে পারবেন।

এছাড়াও যদি গুগলে free app builder websites লিখে সার্চ করেন, তাহলে অনেক ওয়েবসাইট আপনি পেয়ে যেতে পারবেন যেগুলোর মাধ্যমে সহজে এবং সম্পূর্ণ ফ্রিতে একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ তৈরি করে নিতে পারবেন।

তবে মনে রাখবেন, যদি আপনি সম্পূর্ণ professional এবং ভালো মানের কোনো অ্যাপ তৈরি করতে চাচ্ছেন, যেটা ভবিষ্যতে প্রচুর জনপ্রিয় করে তুলে সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করার ইচ্ছা আপনার থাকে, তাহলে অবশ্যই একজন ভালো এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপার (App developer) এর সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ আমি দিবো।

তাদের কাছ থেকে আপনি সম্পূর্ণ প্রফেশনাল এপ তৈরি করে নিতে পারবেন। এজন্য আপনাকে ভালো পরিমাণে টাকা বিনিয়োগ করতে হবে।

কিন্তু এমন কিছু ফ্রি এন্ড্রয়েড অ্যাপ বিল্ডার ওয়েবসাইট রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে কোনো ধরনের প্রোগ্রামিং দক্ষতা ছাড়াই মোবাইল অ্যাপ তৈরি করা সম্ভব।

যেমন,

  • AppyPie
  • Appsgeyser
  • Glide
  • Thunkable
  • Bravo Studio
  • AppGyver
  • Kodular

এই সাইটগুলোতে প্রবেশ করে আপনি আপনার প্রয়োজন মতো এপস বানাতে পারবেন।

“Apps তৈরি করতে কত টাকা লাগে” অনেকেই এই প্রশ্নটি করে থাকেন।

দেখুন, উপরে বলা ওয়েবসাইটগুলোর মাধ্যমে অ্যাপ তৈরি করতে আপনাকে কোনো টাকা বিনিয়োগ করতে হবে না। সম্পূর্ণ ফ্রিতেই আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার দিয়ে নিজের অ্যাপ বানাতে পারবেন এবং ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

তৈরি করা অ্যাপ পাবলিশ করুন

মোবাইল এপ ডাউনলোড করার জন্য Google Play Store বিশ্বজুড়ে সেরা একটি App Store হিসেবে পরিচিত।

কারণ, সকল android users-রা তাদের প্রয়োজনীয় অ্যাপসমূহ Play Store এ খুঁজে থাকেন এবং এখান থেকে install করে থাকেন।

তাই একটি এন্ড্রয়েড এপ তৈরি করার পর সেটি প্লে স্টোরে পাবলিশ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কেননা বিখ্যাত এই মোবাইল অ্যাপ স্টোরে যদি আপনার এপটি থাকে, তাহলে সারা বিশ্বের সব অ্যান্ড্রয়েড ইউজার আপনার অ্যাপটি খুঁজে পাবেন। এতে আপনার অ্যাপটি প্রচুর লোকদের দ্বারা ডাউনলোড হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

আর কেবল একটি এপ তৈরি করে সেটা নিজের কাছে রাখলে ব্যবহারকারীরা জানতে পারবেন না এবং ডাউনলোড করার সুযোগ খুবই কম।

আর যেকেউ নিজের অ্যাপ গুগল প্লে স্টোরে সাবমিট করতে চাইলে তাকে একটি Google play developer account বা publisher account তৈরি করতে হবে।

গুগল প্লে ডেভেলপার একাউন্ট তৈরি করার জন্য Google Play Console এ গিয়ে সাইন আপ করতে হবে। এর জন্য আপনাকে ২৫ ডলার বা প্রায় ২৮০০ টাকা registration fee দিতে হবে।

গুগল প্লে পাবলিশার একাউন্ট তৈরি করার আপনার বানানো অ্যাপটি প্লে স্টোরে পাবলিশ করতে হবে এবং সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারবেন।

অ্যাপ তৈরি করে কিভাবে আয় করা যায়? সেরা ৮টি ইনকামের উপায়

কিভাবে অ্যাপ তৈরি করে ইনকাম করা যায়
8 Best Ways To Earn Money From Your Android Apps.

যদি আপনার একটি এপ তৈরি করা হয়ে গেছে তাহলে এখন আপনার এপস থেকে টাকা ইনকাম করার উপায়গুলো সম্পর্কে জানতে হবে।

তাই আমি কিছু নিচে কিছু সেরা এবং জনপ্রিয় এন্ড্রয়েড অ্যাপ দিয়ে টাকা ইনকাম করার উপায়গুলো আপনাদের বলে দিচ্ছি।

তাহলে চলুন দেরি না করে মোবাইল এপ বানিয়ে টাকা আয় করার সেরা ৮ টি উপায় সম্পর্কে জেনে নিই।

1. Advertisements

একটি এন্ড্রয়েড এপ বানিয়ে টাকা ইনকাম করার সবথেকে জনপ্রিয় উপায় হলো বিজ্ঞাপন (ads) দেখিয়ে ইনকাম।

যদি আপনার তৈরি করা এপ প্রচুর পরিমাণে ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করে নিয়ে প্রতিদিন ব্যবহার করছেন তাহলে আপনি তাদেরকে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে টাকা ইনকাম শুরু করতে পারবেন।

বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য আপনার একটি advertisements programme বা company ব্যবহার করতে হবে।

বিজ্ঞাপন দেখিয়ে এপস থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য সবচেয়ে সেরা advertising programme হলো Google AdMob.

ওয়েবসাইট বা ব্লগে যেমন আমরা Google AdSense এর মাধ্যমে সহজেই আমাদের লেখা আর্টিকেলগুলোতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করতে পারি। একইভাবে, এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশনগুলোতে বিজ্ঞাপন দেখানো হয় Google AdMob এর মাধ্যমে।

অ্যাপে বিজ্ঞাপন লাগানোর জন্য আপনাকে প্রথমে একটি গুগল এডমব একাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে।

কিছু ঘন্টার মধ্যেই আপনার একাউন্ট active হয়ে যাবে এবং এপসের ভিতর ad বসাতে পারবেন।

আর এই বিজ্ঞাপনগুলোর উপর যখন ব্যবহারকারীরা ক্লিক করবে তখন এর বিনিময়ে গুগল এডমব একাউন্টে আপনার টাকা যোগ হয়ে যাবে।

আবার ad impression বা আপনার দেখানো বিজ্ঞাপনে যদি ব্যবহারকারীরা ক্লিক না করে তারপরও কেবল বিজ্ঞাপন দেখানোর বিনিময়ে টাকা আয় করতে পারবেন।

এপসে গুগল এডমবের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করাটা খুবই জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। যার মাধ্যমে প্রত্যেকটি এপসের মালিক টাকা আয় করছেন।

2. Subscriptions

অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ থেকে টাকা আয় করার অন্যতম একটি উপায় হলো প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন। আপনি ইউজারদের প্রথমে বিনামূল্যে আপনার অ্যাপটি ব্যবহার করার অনুমতি দিতে পারেন এবং কিছু service বা পরিষেবা আপনি lock করে রাখতে পারন।

সেই পরিষেবাগুলো ব্যবহার করার জন্য ব্যবহারকারীদের প্রিমিয়াম সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। এভাবে আপনি টাকা পেতে পারবেন।

যদি আপনার অ্যাপটি ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা উপকৃত হন তাহলে তারা অবশ্যই আপনার premium subscriptions কিনবেন।

আপনি হয়তো learning, tutorial অথবা online courses এর এপসগুলো ব্যবহার করছেন।

তো এগুলোর কিছু কনটেন্ট আমাদের ফ্রীতে দেখতে দেওয়া হয় আবার কিছু কনটেন্ট ফ্রীতে দেখতে দেওয়া হয় না।

অর্থাৎ এই এপসগুলোতে সকল কন্টেন্ট দেখার জন্য আমাদের টাকা দিয়ে সাবস্ক্রিপশন করতে বলা হয়ে থাকে।

অর্থাৎ সহজভাবে বলতে গেলে, ধরুন আপনি একটি অনলাইন কোর্সের (online coures) এপ্স ব্যবহার করছেন।

এখানে আপনি কিছু কোর্স ফ্রীতে করতে পেলেন, এরপর আপনার ইচ্ছা হলো বাকি কোর্সগুলো করার। অর্থাৎ কনটেন্টগুলো আপনার ভালো লাগলো। আর সেই বাকি কনটেন্টগুলোর এক্সেস পাওয়ার জন্য আপনার কাছে কিছু টাকা চাওয়া হলো, যার বিনিময়ে আপনাকে সেই কনটেন্টগুলোকে দেখানো হবে।

আপনিও চাইলে এভাবে premium subscriptions এর মাধ্যমে এপস থেকে টাকা ইনকাম করতে পারেন অর্থাৎ আপনার ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে পারেন।

3. In-App Purchases

এই পদ্ধতিতে প্রচুর পরিমাণে এপ ডেভেলপাররা টাকা ইনকাম করে থাকেন।

আপনি হয়তো এরকম কতগুলো android app ব্যবহার করেছেন যেগুলোতে কিছু free features থাকে। অর্থাৎ আপনি যদি সেই এপসের ফ্রি ভার্সন ব্যবহার করেন, তাহলে ফ্রিতে যে features বা

গুলো abailable রয়েছে কেবল সেগুলোই আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।

আর কিছু ভালো এক্সট্রা ফিচারস (extra features) দেওয়া থাকে যেগুলো ব্যবহারের জন্য আপনার কাছ থেকে কিছু টাকা চাওয়া হয়ে থাকে যা সেই এপসের মালিক আপনার কাছ থেকে নিয়ে থাকে।

এভাবে in-app purchases মনিটাইজেশন সিস্টেমের মাধ্যমে আপনি এপ থেকে আয় করতে পারেন।

4. Sponsorships

একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ থেকে অল্প সময়ে অধিক টাকা ইনকাম করার জন্য sponsorship সবচেয়ে সেরা একটি ইনকামের উপায়।

আপনি যদি একটি এপসকে অনেক জনপ্রিয় করে তুলতে পারেন এবং প্রচুর পরিমাণে ইউজার রয়েছে তাহলে স্পন্সরশীপের মাধ্যমে অবশ্যই টাকা আয় করতে পারবেন।

তবে এজন্য আপনার অ্যাপস এর ভিতরে কিছু ভালো এবং unique features থাকা লাগবে। আপনার অ্যাপটি অবশ্যই অনন্য ও ব্যবহারকারীদের জন্য আকর্ষণীয় হতে হবে। কারণ, উচ্চ-মানের অ্যাপ স্পন্সরদের আকর্ষণ করে।

আপনার অ্যাপের একটি উল্লেখযোগ্য এবং সক্রিয় ব্যবহারকারী বেস তৈরি করতে হবে। কেননা স্পন্সররা সাধারণত অনেক ব্যবহারকারী রয়েছে এমন অ্যাপগুলোতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়।

যদি বড় কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আপনি sponsorship পেয়ে যান তাহলে সেখান থেকে monthly subscription হিসেবে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

5. Affiliate Marketing

আমরা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যেরকম ভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকি তেমনি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস এর মাধ্যমে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

বর্তমানে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার প্রক্রিয়াটি প্রচুর জনপ্রিয়।

এর মাধ্যমে আপনি অন্যান্য কোম্পানির প্রোডাক্ট ও সার্ভিস গুলো বিক্রি করে দেওয়ার মাধ্যমে কমিশন (commission) পেতে পারবেন।

তবে এ জন্য দরকার প্রচুর অডিয়েন্স (Audiences). আপনার অ্যাপস এর যদি প্রচুর ইউজার রয়েছেন, তাহলে এফিলিয়েট লিংক (Affiliate link) এর মাধ্যমে আপনার টাকা আয় করার সুযোগ অবশ্যই থাকছে।

আপনাকে প্রথমে একটি কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ register করতে হবে।

এরপর সেই কোম্পানির বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট affiliate link দেওয়া হবে।

এই লিংক app-এ আপনার অডিয়েন্সের সাথে শেয়ার করতে পারবেন। যখন কেউ এই এফিলিয়েট লিংকে ক্লিক করে product বা service টি ক্রয় করবে, তখন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা commission income করতে পারবেন।

6. Electronic Bill Payments

আপনার অ্যাপে ইলেকট্রনিক বিল পরিশোধের জন্য একটি option রাখতে হবে যেটার মাধ্যমে লোকেরা তাদের বিদ্যুৎ, জল, ল্যান্ডলাইন, পোস্টপেইড সংযোগ এবং আরও অনেক কিছুর বিল পরিশোধ করতে পারে।

কারণ, আজকাল লোকেরা স্থানীয় অফিস বা সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে বিল পরিশোধ করার চেয়ে মোবাইল ফোন থেকে বিল পরিশোধ করতে অধিক পছন্দ করেন।

বিল পেমেন্টের জন্য আপনি ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে কোনো চার্জ করবেন না, তবে আপনার অ্যাপের ব্যবহারকারীদের দ্বারা পরিশোধ করা প্রতিটি বিল পেমেন্টে আপনি কমিশন পেতে পারবেন।

7. Paid Apps

আপনি কোনো প্রিমিয়াম সামগ্রী বা পরিষেবা প্রদান করতে পারেন যেগুলো বিনামূল্যের উৎসগুলোতে সহজে পাওয়া যায় না। উদাহরণস্বরূপ, ইবুক অথবা অন্যান্য সামগ্রী।

এতে আপনি ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে এককালীন টাকা আদায় করবেন এবং এরপরে তারা আপনার অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারবেন।

এই ধরনের অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীরা যাতে কোনো ধরনের ঝামেলা বা ডিস্টার্ব ছাড়াই ব্যবহার করতে পারেন, এজন্য কোনো বিজ্ঞাপন দেখানো উচিত নয়।

কারণ, যেহেতু তারা আপনাকে টাকা দিয়ে আপনার অ্যাপটি ব্যবহার করবেন, তাই তারা যাতে অ্যাপটি ব্যবহার করে অধিক সুবিধা পান যেদিকে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে।

যখন আপনার অ্যাপটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে, তখন এর দ্বারা আপনি প্রতিদিন বা প্রতি মাসে ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

গুগল App ডাউনলোড বা ইনস্টল করার জন্য কি টাকা দেবে?

অনেকেই মনে করে থাকেন যে, একটি এপস ইউজাররা ডাউনলোড করলে এর বিনিময়ে টাকা পাওয়া যাবে।

কিন্তু এটি একটি ভুল ধারণা। এপস download এবং install এর বিনিময়ে আপনাকে কোন টাকা দেওয়া হবে না।

অর্থাৎ Google Play Store এ আপনার এপস যদি লাখ লাখ বার ডাউনলোড করা হয়ে থাকে তারপরও আপনি এক টাকাও ইনকাম করতে পারবেন না।

কেননা উপরে বলা উপায়গুলোর সাহায্যেই কেবল এন্ড্রয়েড অ্যাপ থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।

তাই আপনি যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার বানানো এন্ড্রয়েড অ্যাপটিকে উপরে উল্লিখিত উপায়গুলোর যেকোনো একটির মাধ্যমে monetize না করছেন, ততক্ষণ আপনি অ্যাপ থেকে কোনরূপ রোজগার করতে পারবেন না।

এক্ষেত্রে যদি কোটি কোটি লোক আপনার অ্যাপটি install করে ব্যবহার করে, তবুও আপনার টাকা ইনকাম হবে না।

Google Play Store এর মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে android users-রা আপনার অ্যাপটি দেখতে পারবেন এবং download করে ব্যবহার করতে পারবেন।

আর অ্যাপ তৈরি করে ইনকাম করার জন্য আপনাকে অবশ্যই Google AdMob এ register করতে হবে এবং বিজ্ঞাপনগুলো আপনার অ্যাপে setup করতে হবে।

এরপর কোনো ইউজার app download করার পর ব্যবহার করার সময় admob কর্তৃক প্রদর্শিত ads গুলো দেখবেন এবং এর বিনিময়ে আপনার অ্যাডমব অ্যাকাউন্টে ডলার জমা হতে থাকবে।

বর্তমানে বেশিরভাগ app developer-রাই গুগল এডমব এর মাধ্যমে তাদের android app কে monetize করে থাকেন এবং বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ইনকাম করে থাকেন। তাই মোবাইল অ্যাপ থেকে টাকা আয় করার জন্য এটি একটি সর্বাধিক জনপ্রিয় প্রক্রিয়া।

তবে, উপরে বলা অন্যন্য উপায়গুলোর মাধ্যমেও আপনি আপনার এন্ড্রয়েড অ্যাপ থেকে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে আপনার অ্যাপে অবশ্যই প্রচুর সংখ্যক ইউজার থাকতে হবে।

অ্যাপ বানিয়ে কত টাকা আয় করা যায়?

অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ তৈরি করে কত টাকা আয় করা যায় তা বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

অ্যাপের ধরন ও মান

গেমস: গেমিং অ্যাপস সাধারণত অধিক লাভজনক হয়ে থাকে। কারণ গেমগুলোতে ইন-অ্যাপ পারচেজ, অ্যাডমোব এবং অন্যান্য মনিটাইজেশন মেথড ব্যবহার করা যায়।

ইউটিলিটি অ্যাপ: ইউটিলিটি অ্যাপ যেমন টুলস, প্রোডাক্টিভিটি অ্যাপ ইত্যাদি অ্যাপগুলো থেকে অতি সহজে ভালো পরিমাণে ইনকাম করা সম্ভব।

মনিটাইজেশন মেথড

ইন-অ্যাপ অ্যাডস: গুগল অ্যাডমোব বা অন্য কোনো অ্যাড নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে অ্যাপে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে আয় করা যায়।

ইন-অ্যাপ পারচেজ: অ্যাপের মধ্যে ভার্চুয়াল আইটেম, সাবস্ক্রিপশন, বা এক্সক্লুসিভ কনটেন্ট বিক্রি করে আয় করা যায়।

পেইড অ্যাপ: পেইড অ্যাপগুলো ডাউনলোড করার জন্য ব্যবহারকারীদের টাকা দিতে হয়।

স্পন্সরশীপ: স্পন্সরদের বিজ্ঞাপন বা ব্র্যান্ডেড কনটেন্ট ব্যবহার করে আয় করা যায়।

ব্যবহারকারী বেস

অ্যাপ ডাউনলোড সংখ্যা: আপনার অ্যাপটি কতবার ডাউনলোড হয়েছে তা আয়ের পরিমাণ নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে।

অ্যাক্টিভ ইউজার: সক্রিয় ব্যবহারকারীদের সংখ্যা এবং তারা অ্যাপটি কত সময় ধরে ব্যবহার করছে তা আয়ের পরিমাণ নির্ণয়ে ভূমিকা রাখে।

বাজার ও প্রতিযোগিতা

মার্কেট ট্রেন্ড: কোন ধরনের অ্যাপগুলো বাজারে জনপ্রিয় এবং কোন ধরনের অ্যাপগুলির চাহিদা বেশি তা জানা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিযোগিতা: বাজারে প্রতিযোগিতার পরিমাণ এবং আপনার অ্যাপের অনন্যতা নির্ধারণ করে আয়ের সম্ভাবনা।

আয়ের উদাহরণ

ইন-অ্যাপ অ্যাডস: যদি আপনার অ্যাপের ১০,০০০ জন সক্রিয় users থাকেন এবং প্রত্যেক ইউজার এর মাধ্যমে দৈনিক ৫ টাকা উপার্জন করতে পারেন, তাহলে আপনার মাসিক ইনকাম দাঁড়াবে ১,০০,০০০ টাকারও বেশি।

ইন-অ্যাপ পারচেজ: যদি আপনার অ্যাপে ৫% ব্যবহারকারী প্রতি মাসে ১০ টাকা খরচ করে এবং আপনার ১০,০০০ সক্রিয় ব্যবহারকারী থাকে, তবে মাসিক আয় হবে ১০,০০০ * ০.০৫ * ১০ = ৫০০০ টাকা।

পেইড অ্যাপ: যদি আপনার অ্যাপটি $২ এর মূল্যে বিক্রি হয় এবং ১০,০০০ কপি বিক্রি হয়, তবে আয় হবে ১০,০০০ * $২ = $২০,০০০।

এক কথায় বলতে গেলে, অ্যাপ থেকে আয়ের পরিমাণ নির্ভর করে অ্যাপের গুণমান, ব্যবহারকারীর সংখ্যা, মনিটাইজেশন কৌশল এবং বাজার পরিস্থিতির উপর।

অনেক ডেভেলপার হাজার হাজার ডলার আয় করে, আবার কেউ কেউ লক্ষাধিক ডলারও আয় করে থাকে। তবে এটি নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর।

অতএব, উপরে বলা বিষয়গুলোর উপর এবং আপনার অ্যাপের প্রচার ও মার্কেটিং কৌশলের উপর আপনার অ্যাপটির সাফল্য এবং আয়ের পরিমাণ নির্ভর করবে।

অ্যাপ তৈরি করে ইনকাম করার জন্য কিসের প্রয়োজন?

এপস তৈরি করে ইনকাম করার জন্য আপনাকে প্রথমেই একটি android app তৈরি করতে হবে।

আপনি বিভিন্ন free app builder platform / website ব্যবহার করে খুব সহজেই কোনো coding knowledge ছাড়াই আপনার অ্যাপ বানাতে পারবেন।

এছাড়া যদি আপনার অনেক ভালো এবং unique কোনো পরিকল্পনা বা আইডিয়া থাকে, তাহলে অবশ্যই একজন app developer হায়ার করে আপনার চাহিদামতো অ্যাপ বানিয়ে নিতে পারবেন।

এজন্য আপনার একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ অথবা মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট কানেকশন অবশ্যই থাকতে হবে।

আর এপ বানানোর পর লোকেরা যাতে সহজেই আপনার অ্যাপটি খুঁজে পায় এবং ডাউনলোড করতে পারে, এজন্য Google Play Store-এ অ্যাপটিকে publish করতে হবে।

App publish এর জন্য অবশ্যই আপনার একটি Google Play Console Account এর দরকার হবে।

তারপর, আপনি যদি বহুল পরিচিত মনিটাইজেশন প্রক্রিয়ায় অ্যাপ থেকে আয় করতে চান, তাহলে আপনাকে একটি Google AdMob একাউন্ট তৈরি করতে হবে। এরপর এখানকার বিজ্ঞাপনসমূহ আপনার অ্যাপে সেট করতে হবে।

এছাড়াও আপনি affiliate marketing, premium subscriptions, in-app purchases, sponsorships ইত্যাদি উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন।

অ্যাপ তৈরি করে আয়: FAQs

অ্যাপ তৈরি করতে কত টাকা লাগে?

বর্তমানে ইন্টারনেটে অনেক free app builder websites / platforms রয়েছে, যেগুলো সম্পূর্ণ ফ্রিতেই ইউজারদের অ্যাপ তৈরি করার সুযোগ প্রদান করে। আর এসব ওয়েবসাইট ব্যবহার করে অ্যাপ বানানোর ক্ষেত্রে আপনার কোনো কোডিং জ্ঞান থাকার প্রয়োজন হবে না। খুব সহজেই নিজের অ্যাপ বানাতে পারবেন এবং ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। তাছাড়া যদি আপনি app developer এর কাছ থেকে অ্যাপ বানিয়ে নিতে চান, তাহলে আপনাকে টাকা দিতে হবে।

1000 ডাউনলোড সহ একটি অ্যাপ কত টাকা দেয়?

দেখুন, আপনার অ্যাপটি যদি ১০০০ জন ডাউনলোড করে তার মধ্যে সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা যদি ৫০০ জন হয়, আর প্রত্যেক জনের থেকে যদি আপনি প্রতিদিন ৫ টাকা পেয়ে থাকেন, তাহলে আপনি মাসে ৫০,০০০০ এর বেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

অ্যাপ ডাউনলোড হলে কি গুগল আমাদের টাকা দেয়?

আপনার অ্যাপটি যদি একটি পেইড অ্যাপ হয়ে থাকে, তাহলেই কেবল ডাউনলোডের বিনিময়ে গুগল আপনাকে টাকা দিবে। আর যদি আপনার বানানো অ্যাপটি একটি ফ্রি অ্যাপ, তাহলে হাজার হাজার লোকজন ডাউনলোড করলেও আপনি কোনো টাকা পাবেন না। তবে, ফ্রি অ্যাপে বিভিন্ন মনিটাইজেশন মেথড গুলোর সাহায্যে করে ইনকাম করতে পারবেন।

আজকে আমরা কি কি জানলাম

বন্ধুরা অ্যাপ তৈরি করে কিভাবে আয় করা যায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আমি আর্টিকেলে বলে দিয়েছি। অ্যাপ ডেভেলপাররা এই পদ্ধতিতে সাধারণত টাকা আয় করে থাকেন।

সবশেষে আমার কথা হলো, গুগোল এডমব এর মাধ্যমে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস থেকে আয় করার পদ্ধতি সবচেয়ে জনপ্রিয়।

এ বিষয়ে আমি আগেই একবার বলেছি তাই আপনি গুগল এডমোব এর ব্যবহার করতে পারেন, এটা আমার ব্যক্তিগত পরামর্শ।

কারণ এর মাধ্যমে অধিকাংশ অ্যাপ ডেভলপার অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ থেকে টাকা ইনকাম করছেন।

আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

অবশ্যই পড়ুন:

Similar Posts

4 Comments

  1. আমার এক ভাই দেখছি মোবাইল অ্যাপ বানিয়ে শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ইনকাম করছেন। অ্যাপের ভিতর এই বিজ্ঞাপনগুলো কোথা থেকে দেখানো হচ্ছে?

    1. হতে পারে তিনি গুগল এডমব এর বিজ্ঞাপন তার অ্যাপে শো করাচ্ছেন।

    1. আপনি যদি আপনার প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসার জন্য সম্পূর্ণ প্রফেশনাল টাইপের অ্যাপ বানাতে চান, তাহলে একজন অ্যাপ ডেভেলপার হায়ার করতে পারেন। আর এমনিতে নিজের পার্সোনাল অ্যাপ বানাতে চাইলে আপনি বিভিন্ন ফ্রি অ্যাপ বিল্ডার ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করতে পারেন অথবা এই সাইটগুলোর প্রিমিয়াম প্লান নিতে পারেন। এগুলোর সাহায্যে আপনি কোডিং জ্ঞান ছাড়াই নিজেই অ্যাপ বানাতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *