ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা ইনকাম করার সহজ ও কার্যকর একটি উপায়

আপনি কি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা ইনকাম করার কথা ভাবছেন?
যদি হ্যাঁ, তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন।
কেননা আজকের আর্টিকেলে আমি একটি সেরা প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি, যেটির মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে কোনো ইনভেস্ট না করেই টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
এই উপায়ে প্যাসিভ ইনকাম করার জন্য আপনার বিশেষ কোনো কারিগরি দক্ষতা থাকতে হবে না। শুধুমাত্র দরকার হবে একটি কম্পিউটার বা স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট কানেকশন।
তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা ইনকাম করার একটি কার্যকর উপায় হলো ব্লগিং
আজকাল প্রত্যেকেই অনলাইনে আয় করার স্বপ্ন দেখে থাকেন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মনে হয় এটি কঠিন এবং শ্রমসাপেক্ষ।
তবে কেমন হয় যদি আপনি সবসময় সক্রিয়ভাবে কাজ না করলেও আপনার ইনকাম চলতে থাকে? এরকম একটি জনপ্রিয় অনলাইন ইনকামের উপায় হলো ব্লগিং।
ব্লগিং এমন একটি উপায় যেটা একবার পুরোপুরি সেটআপ করে নিতে পারলে আপনি ঘুমের মধ্যেও টাকা আয় করতে পারবেন।
ব্লগিং এর মূল কাজ হলো লেখালেখি করা। এই কাজে আপনাকে সবসময় লেগে থাকতে হবে না। আপনি নিজের চাকরি, ব্যবসা বা পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর সময়ে লেখালেখি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আমি নিজেও ব্লগিং করে ঘরে বসে প্রতি মাসে ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করছি। আমি বর্তমানে এই কাজে প্রতিদিন মাত্র ২ ঘন্টা করে সময় ব্যয় করছি। আর এটা অনেকটা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা ইনকাম করার মতোই।
আপনিও প্রতিদিন দুই থেকে চার ঘন্টা সময় দিয়ে ব্লগিং করে দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
এই আর্টিকেলে আমরা জানবো কীভাবে ব্লগিং শুরু করবেন, কীভাবে এটি থেকে প্যাসিভ ইনকাম করা যায় এবং কীভাবে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা ইনকাম করা বাস্তবে সম্ভব!
ব্লগিং কি এবং এটি কিভাবে কাজ করে?
ব্লগিং হলো একটি ডিজিটাল মাধ্যম যেখানে কেউ নিজের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা বা নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের ওপর তথ্য শেয়ার করে থাকে। সহজভাবে বলতে গেলে, ব্লগ হলো একটি অনলাইন জার্নাল বা ওয়েবসাইট যেখানে নিয়মিত কনটেন্ট প্রকাশ করা হয়।
ব্লগ ব্যক্তিগত, প্রফেশনাল বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়ে থাকে। কেউ শখের বসে ব্লগে লেখালেখি করে থাকে, আবার কেউ এটিকে প্যাসিভ ইনকামের মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার করে।
Blogging করার জন্য আপনার কোনো বিশেষ দক্ষতা থাকার প্রয়োজন নেই। যেহেতু ব্লগিং এর আসল কাজ হচ্ছে লেখালেখি করা। এজন্য এই কাজের ক্ষেত্রে আপনার কনটেন্ট রাইটিং এর দক্ষতা থাকতে হবে।
আপনি এখন আমার যে লেখাটি পড়ছেন, এটি একটি কনটেন্ট। একটি ভালো মানের কনটেন্ট সাধারণত ১০০০ থেকে ৩০০০ শব্দের মধ্যে হয়ে থাকে।
তাই আপনার যদি নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের ওপর এক হাজার থেকে তিন হাজার শব্দের কনটেন্ট লেখার দক্ষতা থাকে, তাহলেই আপনি ব্লগিং শুরু করতে পারবেন।
আপনার ব্লগে নিয়মিত নতুন নতুন এসইও ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট বা আর্টিকেল পাবলিশ করতে থাকলে ধীরে ধীরে আপনার ব্লগে গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভিজিটর আসতে শুরু করবে।
প্রতিদিন ভালো পরিমাণে অর্গানিক ভিজিটর আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে আসতে শুরু করলে আপনি বিভিন্ন উপায়ে ব্লগ থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।
ব্লগ থেকে ইনকামের প্রধান উপায়গুলো কী কী?
ভিজিটর হলো ওয়েবসাইটের প্রাণ। ওয়েবসাইট বা ব্লগ থেকে ইনকামের জন্য ভিজিটর থাকা অত্যন্ত জরুরী।
একটি অনলাইন ব্লগ বা ওয়েবসাইট বানানোর পর যদি নিয়মিত নতুন নতুন আর্টিকেল লিখতে পারেন, তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই আপনার সাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটরস আসতে শুরু করবে।
আর ওয়েবসাইটে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ ভিজিটর আনতে পারলে আপনি অর্থ উপার্জন করা শুরু করতে পারবেন।
একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ থেকে একাধিক উপায়ে টাকা ইনকাম করা যায়। নিচে প্রত্যেকটি উপায় সম্পর্কে এক এক করে আলোচনা করা হলো।
১. গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে আয়
গুগল এডসেন্স হলো বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি অ্যাড নেটওয়ার্ক প্লাটফর্ম। এটি সরাসরি গুগলের দ্বারা পরিচালিত।
আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগে এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন। গুগল থেকে টাকা ইনকাম করার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হলো গুগল এডসেন্স।
এডসেন্স থেকে ইনকামের জন্য ওয়েবসাইটে কমপক্ষে ডেইলি ৩০০ থেকে ৫০০ অর্গানিক ভিজিটর থাকতে হবে। আর ওয়েবসাইটে কমেও ৩০ থেকে ৫০টি ভালো মানের আর্টিকেল থাকতে হবে।
Website থেকে ইনকামের জন্য সবচেয়ে প্রথমে আপনাকে একটি গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলতে হবে। এরপর ওয়েবসাইটকে গুগল এডসেন্স অ্যাকাউন্টের সাথে কানেক্ট করতে হবে।
এরপর কয়েকদিনের মধ্যে গুগল অ্যাডসেন্স টিম আপনার সাইটটি রিভিউ করে দেখবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনার অ্যাডসেন্স একাউন্ট এপ্রুভ হয়ে যাবে।
আর এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার পর আপনি এডসেন্স থেকে বিজ্ঞাপনের কোড সংগ্রহ করে আপনার সাইটে বসাতে পারবেন। সাইটের যেসব জায়গায় ad code বসাবেন, সেসব জায়গায় অ্যাড শো হবে।
যখন লোকেরা আপনার সাইটের আর্টিকেল পড়তে এসে বিজ্ঞাপনগুলোতে ক্লিক করবে, তখন আপনার অ্যাডসেন্স একাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা হবে।
এভাবে Google AdSense এর মাধ্যমে খুব সহজেই একটি ওয়েবসাইট থেকে অর্থ উপার্জন করা যায়। এডসেন্স থেকে আপনার ইনকাম একবার শুরু হয়ে গেলে আপনি ওয়েবসাইটে কাজ না করলেও ইনকাম হতেই থাকবে।
অর্থাৎ যতদিন আপনার সাইটে ভিজিটর আসবে, ততদিন পর্যন্ত ইনকামও চলতে থাকবে। এভাবে ওয়েবসাইট বা ব্লগ বানিয়ে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ওয়েবসাইট থেকে আয়ের বিভিন্ন উপায় থাকলেও গুগল অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে আয় করাটা সবচেয়ে সহজ।
রিলেটেড আর্টিকেল – দ্রুত গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার উপায়
২. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
Affiliate marketing হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানি বা ব্রান্ডের প্রোডাক্ট বিক্রি করিয়ে দিতে হবে। প্রতিটি সেলসের বিনিময়ে আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কমিশন পেতে পারবেন।
বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইটের এফিলিয়েট প্রোগ্রাম নামে আলাদা একটি সেকশন রয়েছে। এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে কাজ করার জন্য আপনাকে এই এফিলিয়েট প্রোগ্রামে register করতে হবে।
এফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হওয়ার পর বিভিন্ন ধরনের পণ্যের affiliate link সংগ্রহ করতে পারবেন। এসব লিংক আপনার ওয়েবসাইটে বসাতে হবে এবং পণ্যগুলোর প্রচার করতে হবে।
যখন আপনার পাঠকরা সেই লিংকে ক্লিক করে কোনো পণ্য কিনবে, তখন আপনি সেই ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কমিশন পাবেন।
এভাবে প্রতিটি সেলসের বিনিময়ে আপনার একাউন্টে কমিশন জমা হতে থাকবে। যত বেশি ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে থাকবে, এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ইনকামের সম্ভাবনাও তত বেশি হবে।
তবে বাংলা ব্লগ বা সাইট থেকে ইনকামের জন্য সাধারণত এফিলিয়েট মার্কেটিং করা হয় না। ইংরেজি ভাষায় তৈরি করা মাইক্রো নিশ ব্লগ বা প্রোডাক্ট রিভিউ ব্লগের মাধ্যমে এফিলিয়েট মার্কেটিং করা অধিক লাভজনক।
বাংলা ব্লগ থেকে আয়ের উপায় হিসেবে এডসেন্স অধিক জনপ্রিয় একটি উপায়।
৩. ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি
ওয়েবসাইট বা ব্লগের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি করেও রোজগার করা যায়।
অনলাইন কোর্স, ইবুক, ফটো, সফটওয়্যার বা মেম্বারশিপ-ভিত্তিক ডিজিটাল কনটেন্টগুলো অনলাইন ব্লগের মাধ্যমে বিক্রি করা যায়।
প্রথমে একটি নির্দিষ্ট নিস বেছে নিয়ে সেই বিষয়ের ওপর high quality কনটেন্ট তৈরি করতে হয় যা পাঠকদের আকৃষ্ট করে।
এরপর ব্লগে ল্যান্ডিং পেজ বা সেলস পেজ তৈরি করে সঠিক মার্কেটিং কৌশল প্রয়োগ করতে হয়, যেমন – সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, ইমেইল মার্কেটিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।
আপনি যদি একবার বিক্রয়ের যোগ্য কোনো ডিজিটাল প্রোডাক্ট তৈরি করতে পারেন তাহলে এটি বারবার বিক্রি করতে পারবেন। এভাবে ব্লগের মাধ্যমে ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করে passive income করার দারুণ সুযোগ রয়েছে।
৪. ওয়েবসাইট বিক্রি করে আয়
বর্তমানে অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পাওয়া একটি নতুন ওয়েবসাইট খুব সহজেই ১০ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়।
আর যদি আপনার ওয়েবসাইটে সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভালো পরিমাণে অর্গানিক ট্রাফিক আনতে পারেন, তাহলে খুব সহজেই ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।
সার্চ ইঞ্জিন থেকে ট্রাফিক আনার জন্য ভালো মানের কনটেন্ট পাবলিশ করতে হবে। প্রতিটি কনটেন্ট ১৫০০ থেকে ৩০০০ শব্দের মধ্যে লিখতে হবে।
এরকম ৩০ থেকে ৪০ টি কনটেন্ট পাবলিশ করার পর আপনি গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন। এরপর আরও নিয়মিত কনটেন্ট পাবলিশ করতে হবে যাতে করে আপনার সাইটের ট্রাফিক বৃদ্ধি পায়।
গুগল এডসেন্স এবং ওয়েবসাইট বিক্রি করার জন্য আপনি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ব্যবহার করতে পারেন। এরকম ট্রাস্টেড দুইটি ফেসবুক গ্রুপ হলো Beginner Bloggers Forum BD এবং Bangladesh Website Marketers (BWM)
এই গ্রুপগুলোতে আপনার সাইট সহজেই বিক্রি করতে পারবেন এবং এডমিন ডিলের মাধ্যমে নিরাপদে লেনদেন করতে পারবেন।
এছাড়াও আপনি চাইলে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস Dealancer.com এর মাধ্যমেও আপনার সাইট বিক্রি করতে পারেন।
কিভাবে একটি সফল ব্লগ তৈরি করবেন এবং সেখান থেকে ইনকাম করবেন? স্টেপ বাই স্টেপ গাইড
সফলভাবে একটি ব্লগ তৈরি করে প্যাসিভ ইনকাম জেনারেট করার জন্য আপনাকে নিচের স্টেপগুলো ফলো করতে হবে।
- উপযুক্ত নিশ নির্বাচন
- ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয়
- নিয়মিত মানসম্পন্ন কনটেন্ট তৈরি
- SEO অপটিমাইজেশন
- মনিটাইজ
১. উপযুক্ত নিশ (niche) নির্বাচন করুন
নিশ বলতে ব্লগের মূল টপিক বা বিষয়কে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ আপনি যে বিষয়ের উপর ব্লগ তৈরি করবেন সেটাই আপনার ব্লগ নিশ।
কয়েকটি জনপ্রিয় ব্লগ নিশ হলো – বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, খেলাধুলা, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং, পড়াশোনা ইত্যাদি।
আপনর যে বিষয়ে ভালো দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে, সে বিষয়ের উপর আপনাকে ব্লগ তৈরি করতে হবে। অর্থাৎ যে বিষয়ে আপনি নিয়মিত ব্লগে লেখালেখি করতে পারবেন, সেই বিষয়টিকেই আপনার ব্লগের নিশ হিসেবে বেছে নিবেন।
আপনি চাইলে মাল্টিনিশ (multi-niche) ব্লগও তৈরি করতে পারেন। এখানে আপনি নিজের পছন্দমতো যেকোনো বিষয় নিয়ে কনটেন্ট লিখতে পারবেন।
তবে আমার হিসেবে মাল্টিনিশ ব্লগ বানানোর থেকে যেকোনো একটি নিশের ওপর ব্লগ বানালে দ্রুত সফল হওয়া সম্ভব।
২. ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয় করুন
ব্লগের নিশ বেছে নেওয়ার পর আপনাকে একটি ডোমেইন নেম এবং একটি ওয়েব হোস্টিং প্যাকেজ ক্রয় করতে হবে।
ডোমেইন নেম হলো আপনার ওয়েবসাইটের URL বা নাম। আর ওয়েব হোস্টিং হলো আপনার সাইটের যাবতীয় সব তথ্য বা ফাইল রাখার জন্য যে স্টোরেজ (storage) দরকার সেটা।
আপনি বাংলাদেশী বিভিন্ন কোম্পানি থেকে Domain ও Web Hosting কিনতে পারেন। তবে AmarHoster খুবই কম দামে ভালো মানের ওয়েব হোস্টিং পরিষেবা প্রদান করে থাকে। এখান থেকে আপনি ডোমেইন নেম ও ওয়েব হোস্টিং ক্রয় করতে পারেন।
তাছাড়া আপনি চাইলে ডোমেইন হোস্টিং না কিনে Blogger.com এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ ফ্রিতে নিজের একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারবেন।
তবে আমার হিসেবে ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করা সবচেয়ে ভালো। কেননা ওয়ার্ডপ্রেসে আপনি বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন যেগুলো ব্লগারে থাকে না।
রিলেটেড – কিভাবে ব্লগারে ফ্রিতে ব্লগ বানিয়ে ইনকাম করবেন
৩. নিয়মিত মানসম্পন্ন কনটেন্ট তৈরি করুন
ওয়েবসাইট বানানো হয়ে গেলে আপনাকে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন আর্টিকেল লিখে সাইটে পাবলিশ করতে হবে।
সার্চ ইঞ্জিনে সবার উপরে rank পাওয়ার জন্য অবশ্যই ভালো মানের SEO friendly কনটেন্ট আপনাকে লিখতে হবে।
কেননা আপনি যে বিষয়ে কনটেন্ট লিখছেন, সেই বিষয়ের উপর আগে থেকেই অনেক ওয়েবসাইটে কনটেন্ট রয়েছে এবং সেগুলো গুগল সার্চ ইঞ্জিনে সবচেয়ে উপরে রয়েছে।
এখন আপনার কনটেন্ট যাতে Google সবার উপরে শো করে, সেজন্য অবশ্যই ওইসব কনটেন্ট এর চেয়ে আপনার কনটেন্ট এর কোয়ালিটি ভালো হতে হবে।
তাছাড়া Google সার্চ ইঞ্জিনে আপনি নিজের সাইটকে rank করাতে পারবেন না এবং আশানুরূপ ভিজিটর আপনার সাইটে আসবে না।
৪. SEO অপটিমাইজেশন
Blogging এর ক্ষেত্রে এসইও এর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসইও অপটিমাইজেশন যেকোনো একটি কনটেন্টকে গুগলের প্রথম পাতায় র্যাংক করাতে সাহায্য করে।
এসইও অপটিমাইজেশন দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেমন – অন পেইজ এসইও অপটিমাইজেশন এবং অফ পেইজ এসইও অপটিমাইজেশন।
অন পেইজ অপটিমাইজেশন এর মধ্যে রয়েছে টাইটেল ট্যাগ, মেটা ডেসক্রিপশন, কিওয়ার্ডের ব্যবহার, ইমেজ এর ব্যবহার, হেডিং ট্যাগ, internal linking ইত্যাদি।
আর অফ পেইজ অপটিমাইজেশন এর মধ্যে রয়েছে ব্যাকলিংক, ডোমেইন অথরিটি ইত্যাদি।
একটি ব্লগের এসইও অপটিমাইজেশন কিভাবে করতে হয় এ বিষয়ে গুগলে সার্চ করলে আপনি সম্পূর্ণ গাইডলাইন পেয়ে যাবেন।
৫. ওয়েবসাইট মনিটাইজ করুন
সবশেষে আপনার ব্লগকে মনিটাইজ করতে হবে। অর্থাৎ ব্লগ থেকে ইনকামের জন্য যেকোনো একটি অ্যাড নেটওয়ার্ক এর বিজ্ঞাপন ব্লগে সেটআপ করতে হবে।
Google AdSense, Adsterra, Propeller Ads ইত্যাদি অ্যাড নেটওয়ার্কের বিজ্ঞাপন আপনার ব্লগে শো করিয়ে আয় করতে পারেন।
তবে বাংলা ব্লগাররা প্রত্যেকেই গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে থাকেন। কেননা গুগল এডসেন্স শতভাগ বিশ্বস্ত একটি ad network এবং এখান থেকে ইনকাম করার প্রক্রিয়া অনেক সহজ।
ব্লগিং এর মাধ্যমে কি আসলেই ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা ইনকাম করা সম্ভব?
দেখুন, কোনো ধরনের কাজকর্ম না করে শুধুমাত্র ঘুমিয়ে থেকে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব নয়। টাকা রোজগার করতে হলে আপনাকে অবশ্যই কোনো না কোনো কাজ করতে হবে।
তবে ব্লগিং হলো প্যাসিভ ইনকামের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি উপায়। তাই ব্লগিং এর মাধ্যমে আপনি আসলেই ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে?
একটি ব্লগ বানানোর পর আপনাকে প্রথম ছয় মাস বা এক বছর নিয়মিত নতুন নতুন আর্টিকেল লিখতে হবে। অর্থাৎ আপনার ব্লগে ভালো মানের ৮০ থেকে ১০০টি আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে এবং সার্চ ইঞ্জিন থেকে প্রতিদিন কমেও ৫০০ ভিজিটর আনতে হবে।
তাহলে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে আপনার ইনকাম শুরু হয়ে যাবে। এরপর কাজ না করলেও এই ইনকাম আপনার চলতেই থাকবে। অর্থাৎ শুরুর দিকে রেগুলার কাজ করে পরে রেগুলার কাজ না করলেও ব্লগিং থেকে ইনকাম করা সম্ভব।
আমি নিজেও ব্লগিং থেকে প্রতি মাসে ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করছি। আমি শুরুর দিকে বেশি সময় দিয়েছিলাম, নিয়মিত কনটেন্ট পাবলিশ করতাম।
কিন্তু এক বছর পর আমি আমার ব্লগে খুব কম সময় দিচ্ছি। আমি এখন মাসে দুই থেকে তিনটি কনটেন্ট পাবলিশ করছি, কিন্তু আমার ইনকাম সমানভাবে হচ্ছে।
নিচে আমার ব্লগিং ইনকামের প্রমণ দেখুন –

দেখুন, আমি পড়াশোনার পাশাপাশি দৈনিক ২ থেকে ৩ ঘন্টা সময় দিয়ে ব্লগিং এর মাধ্যমে মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ইনকাম করছি।
এটা কিন্তু অনেকটা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে অর্থ উপার্জন করার মতোই। আপনিও এরকমভাবে প্যাসিভ ইনকাম করতে চাইলে ব্লগিংকে বেছে নিতে পারেন।
সর্বশেষ
তাহলে বন্ধুরা, আজকের আর্টিকেলে আমি খুব কম কাজ করে আরামে কিভাবে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করা যায় এ বিষয়ে আপনাদের জানিয়ে দিয়েছি।
আমি নিজেও আমার ব্লগে লেখালেখি করে প্যাসিভ ইনকাম জেনারেট করছি। এজন্য আপনাদের সাথে এই উপায়টি শেয়ার করলাম।
আপনি যে বিষয়ে ভালো জানেন, সে বিষয়েই লেখালেখি শুরু করতে পারেন। আর যদি লেখালেখি আপনার শখ হয়ে থাকে, তাহলে আপনার শখকে টাকা ইনকামে রূপান্তরিত করতে পারবেন ব্লগিং এর মাধ্যমে।
আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আর্টিকেলের বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করবেন।
অবশ্যই পড়ুন –
আমি অনলাইনে কাজ করতে চাই
অনলাইনে কাজ করে সহজে ও দ্রুত ইনকাম করার জন্য ব্লগিং করতে পারেন। তবে ব্লগিং শুরু করার জন্য আপনাকে আগে কনটেন্ট রাইটিং ও এসইও সম্পর্কে ভালো ধারণা অর্জন করতে হবে।