টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে: সেরা ১০টি – (২০২৪)

অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার সহজ পদ্ধতিগুলো কি? কিভাবে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করা যায়? টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে এসব বিষয় নিয়ে আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করতে চলেছি।

যদি বাংলাদেশে টাকা আয় করার সহজ উপায়গুলোর কথা বলা হয়, তাহলে অনলাইন (online) এবং অফলাইন (offline) এই দুই ধরনের কাজের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায়।

কিন্তু অফলাইনে টাকা ইনকাম করার জন্য আপনাকে যেকোনো ধরনের চাকরি (job), ব্যবসা (business) বা অন্যান্য কাজ করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে চাকরি বা ব্যবসা কোনটিই করছেন না এরকম লোকের সংখ্যা আমাদের দেশে প্রচুর রয়েছে।

এমনিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির এই যুগে ঘরে বসে অনলাইনে কাজ করে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করাটা তেমন কঠিন ব্যাপার নয়।

তবে, আপনি যদি আরো অধিক রোজগার করতে চান তাহলে আপনার মেধা ও শ্রম দিয়ে বেশ কিছু উপায়ে অনলাইন থেকে ঘরে বসে প্রতি মাসে ১৫০০০ – ২০০০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

আপনি যদি ছাত্র বা স্টুডেন্ট হিসেবে অনলাইনে আয় করতে চান, তাহলে ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয়ের অনেক উপায় রয়েছে যেগুলোর বিষয়েও আজকে আমরা আলোচনা করবো।

টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে

টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে
Online Earning: বাড়িতে বসে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়।

আপনি কি অনলাইনে part-time বা full-time কাজ করে টাকা ইনকাম করতে চান?

তাহলে বাংলাদেশ থেকে সঠিক পদ্ধতিতে অনলাইন থেকে আনলিমিটেড টাকা ইনকাম করার উপায়গুলো সম্পর্কে নিচে আমরা আপনাদের জানাতে চলেছি।

এসব উপায়ে আপনারা মোবাইল এবং কম্পিউটার দিয়ে সম্পূর্ণ ফ্রিতে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

আপনি যদি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন তাহলে এই কাজের মাধ্যমেও আপনি অনলাইনে ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

এছাড়াও অনেক টাকা আয় করার apps রয়েছে যেগুলো থেকে আপনারা আয় করতে পারবেন।

তবে মনে রাখবেন, কষ্ট এবং কাজ না করে জীবনে ভালো কিছু পাওয়ার আশা করা যায় না। তাই ঘরে বসে ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করার জন্য আপনাকে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে।

সহজে টাকা ইনকাম করার সেরা ১০টি অনলাইন উপায়

সঠিক পদ্ধতিতে কাজ করতে পারলে এখানে উল্লেখ করা প্রত্যেকটি উপায়ে আপনি সত্যি অনলাইন থেকে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

  1. Blogging এবং Website তৈরি করে লেখালেখি
  2. YouTube Channel থেকে আয়
  3. ফেসবুক থেকে ইনকাম
  4. ফ্রিল্যান্সিং
  5. Content Writing
  6. Affiliate Marketing করে আয়
  7. ওয়েবসাইট বিক্রি করে আয়
  8. SEO করে আয়
  9. অনলাইনে পড়িয়ে (Online Teacher) আয়
  10. ছবি বিক্রি করে ইনকাম

এখন চলুন উপরে বলা টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়গুলোর বিষয়ে নিচে ভালো করে জেনেনিই।

১. Blogging এবং Website তৈরি করে ইনকাম

আপনি কি জানেন, একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট বানিয়ে সেখানে লেখালেখি করে আপনি আনলিমিটিটেড টাকা ইনকাম করতে পারবেন?

অনলাইনে ইনকামের একটি পুরাতন এবং কার্যকরী পদ্ধতি হলো ব্লগিং (Blogging)। ঘরে বসে ব্লগিং করে প্রতি মাসে ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

যদি আপনি এ বিষয়ে না জেনে থাকেন তাহলে ভালো করে জেনে রাখুন।

আপনি এখন আমার এই লেখাটি পড়ছেন, এটি একটি ব্লগ আর্টিকেল। তাহলে ভেবে দেখুন, আপনার যদি লেখালেখিতে ভালো আগ্রহ থাকে তাহলে এই কাজের মাধ্যমে আপনি কেবল ঘরে বসে টাকা আয় করতে পারবেন।

এরকম প্রচুর টপিক রয়েছে যেগুলো নিয়ে লোকেরা প্রতিদিন গুগল (Google) এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে (Search engine) সার্চ করে থাকে।

এগুলোর যেকোন বিষয়ে যদি আপনি নিজের ব্লগে আর্টিকেল লিখে পাবলিশ (publish) করেন, তাহলে লোকেরা এসে আপনার আর্টিকেল পড়বে।

আপনার যে বিষয়ে আগ্রহ (passion), জ্ঞান (knowledge) এবং অভিজ্ঞতা (experience) বেশি, সে বিষয়ে ব্লগিং করা আপনার জন্য অধিক লাভজনক (profitable) হবে।

এক্ষেত্রে আপনি যেকোন একটি নির্দিষ্ট বিষয় বা niche উপর লেখালেখি করতে পারবেন। যেমন: টেকনোলজি, খেলাধুলা, রান্না, ভ্রমণ, পড়ালেখা ইত্যাদি নিশের উপর আপনি ব্লগিং শুরু করতে পারেন।

যখন আপনি একটি নতুন ওয়েবসাইট বা ব্লগ খুলবেন এবং ব্লগে লেখালেখি করা স্টার্ট করে দিবেন, এরপর কিছুদিনের মধ্যে আপনার ব্লগে ভিজিটরস (visitors) আসা শুরু হয়ে যাবে।

তারপরে আপনার ব্লগে গুগল এডসেন্স (Google AdSense) এর বিজ্ঞাপন (advertisements) দেখিয়ে টাকা ইনকাম করা শুরু করে দিতে পারবেন।

গুগল এডসেন্স হলো গুগলের এমন একটি সার্ভিস যেটা আপনার ব্লগের আর্টিকেলে বিভিন্ন ধরনের text, link, video এবং image advertisements দেখিয়ে online income করার সুযোগ দিয়ে থাকে।

এভাবে যত বেশি visitors আপনার ব্লগে আসবে, গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে তত বেশি পরিমাণে income আপনি করতে পারবেন।

আপনি চাইলে Blogger.com এর মাধ্যমে খুব সহজে এবং কম সময়ে একটি ফ্রি ব্লগ তৈরি করে নিতে পারবেন।

ঘরে বসে ব্লগিং করে অনেকেই এত taka income করছেন যা আপনি ভাবতেও পারবেন না। আর এটা বাংলাদেশে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়গুলো মধ্যে সবচেয়ে লাভজনক একটি উপায় হিসেবে বিবেচিত।

২. YouTube Channel তৈরি করে অনলাইন ইনকাম

ব্লগিং এর মতোই বাংলাদেশে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়গুলোর মধ্যে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার আইডিয়া অধিক লাভজনক।

বাংলাদেশ অনেক ইউটিউবার রয়েছেন যারা তাদের YouTube channel থেকে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছেন।

আপনিও একটি ইউটিউব চ্যানেল বানিয়ে সেখানে ভিডিও আপলোড করে অনলাইন ইনকাম করতে পারবেন।

ইউটিউবে চ্যানেল বানানো অনেক সহজ। এজন্য আপনার YouTube.com ওয়েবসাইটে যেতে হবে এবং আপনার Gmail account দিয়ে sign in করতে হবে।

ইউটিউব Google এর product হওয়ার কারণে এখানে আপনার একটি জিমেইল একাউন্ট এবং জিমেইল এর পাসওয়ার্ড অবশ্যই প্রয়োজন হবে।

এরপর আপনি ইউটিউবে নিজের একটি চ্যানেল বানিয়ে নিতে পারবেন এবং চ্যানেলে video upload করার option পেয়ে যাবেন।

আপনি যদি প্রয়োজনীয় ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে আপলোড করতে পারেন তাহলে ইউটিউব থেকে আপনি ভালো পরিমাণে income করে নিতে পারবেন।

যদি আপনার কাছে কোন video camera না থাকে তবুও আপনি মোবাইল দিয়ে YouTube channel এ কাজ শুরু করতে পারেন।

এক্ষেত্রে আপনার ভিডিও এডিটিং (video editing) এর ভালো দক্ষতা থাকতে হবে। কেননা আপনি যদি নিজের ভিডিওকে আকর্ষণীয় করে বানাতে না পারেন তাহলে লোকেরা আপনার ভিডিও পছন্দ করবেন না এবং আপনার ভালো পরিমাণে views আসবে না।

ইউটিউব থেকে ইনকাম করার জন্য যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো, আপনি যে ভিডিওগুলো আপলোড করবেন সেগুলো আপনার নিজের বানানো ভিডিও হতে হবে।

যদি আপনি অন্যের বানানো আপলোড করেন তাহলে সেটা copyright video হিসেবে গণ্য হবে এবং সেই ভিডিওগুলো থেকে আপনি টাকা ইনকাম এর সুযোগ পাবেন না।

ইউটিউব চ্যানেল start করার পর যখন আপনার চ্যানেলে ১ হাজার subscribers হয়ে যাবে, তখন আপনি আপনার চ্যানেলকে monetize করাতে পারবেন।

Monetization চালু হওয়ার পর ইউটিউব আপনার channel এর ভিডিওগুলোতে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করবে। আর এভাবে আপনি ইউটিউব চ্যানেল টাকা টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

৩. ফেসবুক থেকে আয়

ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার বেশ কয়েকটি সহজ উপায় রয়েছে। এমনিতে ফেসবুক থেকে online income এর প্রক্রিয়া অনেক সহজ।

Facebook থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য প্রথমেই দরকার হবে একটি ফেসবুক পেজ (Facebook page)। এর পাশাপাশি আপনার ফেসবুক পেজে প্রচুর followers থাকতে হবে।

ইউটিউবের মতো ফেসবুকেও মনিটাইজেশন (monetization) feature রয়েছে। এর মাধ্যমে ভিডিও ক্রিয়েটর-রা (video creator) ফেসবুকে upload করা ভিডিওতে advertisements দেখিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারেন।

বাংলাদেশে অনেক video creator রয়েছেন, যারা মজার মজার ভিডিও (funny video) বানিয়ে ফেসবুক থেকে প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করছেন।

এছাড়াও যদি আপনার একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট থাকে, তাহলে Facebook instant article এর সাহায্যে আপনি income করতে পারবেন।

তাছাড়াও ফেসবুক পেজ বানিয়ে সেখানে বিভিন্ন product বিক্রি করতে পারবেন। এভাবে আপনি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে online business শুরু করতে পারবেন। বাংলাদেশের অনেক লোকেরা ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তাদের প্রোডাক্ট বিক্রি করে ব্যবসা করছেন।

ফেসবুকের মাধ্যমে affiliate marketing এর সুযোগ রয়েছে। এসবের পাশাপাশি আপনি যদি গেম খেলতে পছন্দ করেন তাহলে আপনি gaming করে এবং জনপ্রিয় গেমসমূহের review এবং tutorial শেয়ার করে ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

৪. ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং লাভজনক অনলাইন ইনকামের উপায় হলো ফ্রিল্যান্সিং (freelancing)

ফ্রিল্যান্সিংকে আজকাল লোকেরা চাকরি এবং ব্যবসার চেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। কেননা একজন সফল ফ্রিল্যান্সার (successful freelancer) এর প্রত্যেকদিনের বা মাসের ইনকাম কত সেটা আপনি ভাবতেও পারবেন না।

আপনি যদি ছাত্র থাকাকালীন ঘরে বসে অনলাইনে টাকা আয় করার উপায় খুঁজছেন, তাহলে freelancing আপনার জন্য সবচেয়ে সেরা এবং লাভজনক হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে।

ফ্রিল্যান্সিং একটি মুক্ত পেশা। এখানে আপনি ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের clients দের কাজ করে দিয়ে প্রচুর পরিমাণে টাকা আয় করতে পারবেন।

আপনি যদি সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য এবং সেরা অনলাইন আর্নিং ওয়েবসাইটগুলো সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং এর ওয়েবসাইটগুলো আপনার জন্য সেরা সমাধান হতে পারে।

যেমম: freelancer, upwork, fiverr এই ওয়েবসাইটগুলোতে আপনি আপনার দক্ষতা অনুযায়ী বিভিন্ন কাজ পেতে পারবেন।

মনে রাখবেন, আপনি যখন এসব ওয়েবসাইটে একজন freelancer হিসেবে কাজ করতে যাবেন, তখন আপনার অবশ্যই সেসব কাজ করার দক্ষতা থাকতে হবে। কাজের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা না থাকলে আপনি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে টিকতে পারবেন না।

এজন্য আপনাকে প্রচুর সময় ও শ্রম দিয়ে প্রথমে বিভিন্ন কাজ শিখতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলোতে যেসব কাজ পাওয়া যায় সেগুলো হলো ওয়েব ডিজাইন (web design), কনটেন্ট রাইটিং (content writing), লোগো ডিজাইন (logo design), ডিজিটাল মার্কেটিং (digital marketing) ইত্যাদি।

কোন ধরনের বিনিয়োগ ছাড়াই ঘরে বসে ফ্রি টাকা ইনকাম করার একটি লাভজনক উপায় হলো ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে জড়িত কাজগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে দক্ষতা অর্জন করে আপনারা মার্কেটপ্লেসে কাজ করে অনলাইন টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

রিলেটেড: ফ্রিল্যান্সিং কি এবং ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবেন

৫. Content Writing

টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে কি কি আছে এ বিষয়ে যদি আপনি জানতে চান, তাহলে যে কাজটির কথা অবশ্যই বলতে হয় সেটা হলো কনটেন্ট রাইটিং (content writing)।

ঘরে বসে অনলাইনে আয় করার জন্য কনটেন্ট রাইটিং বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি কাজ। একজন professional content writer প্রতি মাসে ৫০০ থেকে ১০০০ ডলার আয় করে থাকেন।

অনেক কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা অনলাইনের মাধ্যমে তাদের business পরিচালনা করে থাকে। আর এজন্য তাদের বিভিন্ন product বা service এর বিষয়ে তাদের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন আর্টিকেল publish করতে হয়, যাতে লোকেরা তাদের সম্পর্কে জেনে নিতে পারে।

এজন্য তারা কনটেন্ট লিখিয়ে নেওয়ার জন্য কনটেন্ট রাইটারদের খুঁজে থাকে। আর এ কাজের জন্য তারা ভালো পরিমাণে ডলার কনটেন্ট রাইটারকে দিয়ে থাকে।

এছাড়াও আপনি যদি একজন কনটেন্ট রাইটার হয়ে উঠতে পারেন এবং SEO friendly কনটেন্ট লিখতে পারেন তাহলে বিভিন্ন অনলাইন ব্লগ বা ওয়েবসাইটে কনটেন্ট লিখে ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে পারনেন।

অন্যান্য সেক্টরগুলোতে কাজের অভাব থাকলেও কনটেন্ট রাইটিং এর কাজের অভাব নেই। দিন দিন কনটেন্ট রাইটারদের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আপনি যদি ঘরে বসে লেখালেখি করে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে আপনি content writing এর কাজকে বেছে নিতে পারেন এবং এর দ্বারা আপনি প্রতি মাসে ভালো পরিমাণে টাকা আয় করতে পারবেন।

৬. Affiliate Marketing করে আয়

অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়সমূহের মধ্যে আরেকটি জনপ্রিয় উপায় হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং।

বর্তমানে এফিলিয়েট মার্কেটিং সারা বিশ্বে একটি জনপ্রিয় online income এর মাধ্যম হিসেবে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশেও প্রতিনিয়ত এফিলিয়েট মার্কেটারদের সংখ্যা বাড়ছে।

এমনিতে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ইনকামের প্রক্রিয়া অনেক সহজ। কিন্তু এই বিষয়ে অনেকের ভালো ধারণা না থাকার কারণে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর প্রতি তেমন আগ্রহ দেখান না।

যদি আপনি এই মার্কেটিং পদ্ধতিটি সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে ভালো করে জেনে রাখুন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো নিজের ওয়েবসাইট বা ব্লগে অন্যের প্রোডাক্ট এর প্রচারণা চালিয়ে বিক্রি করা।

বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার ই-কমার্স (E-commerce) ওয়েবসাইট রয়েছে যারা বিভিন্ন দেশে প্রোডাক্ট বা পণ্য ডেলিভারি (delevary) দিয়ে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশেও এরকম প্রচুর ই-কমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে।

প্রতিটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটে affiliate marketing এর একটি আলাদা section রয়েছে। এখানে আপনি যখন register করবেন তখন আপনি তাদের affiliate member হয়ে যাবেন।

এরপর তাদের ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা পণ্যের link কপি করে আপনার নিজের ওয়েবসাইটে সেই লিংকটি শেয়ার করে প্রোডাক্টটির promotion চালাতে পারবেন।

যখন কেউ সেই লিংকে ক্লিক করে প্রোডাক্টটি ক্রয় করবে, তখন সেই সেলস থেকে আপনি কিছু কমিশন পাবেন। এভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে টাকা আয় করা যায়।

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে যেকেউ income করতে পারে। এছাড়াও এফিলিয়েট মার্কেটিং এর দ্বারা খুব কম পরিশ্রমে টাকা ইনকাম করা যায়।

কেবল যে ওয়েবসাইট বা ব্লগের মাধ্যমে এফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়, তা নয়। আপনার যদি বড় কোন ফেসবুক গ্রুপ বা ফেসবুক পেজ থাকে যেখানে প্রচুর members বা followers রয়েছে তাহলে সেখানে এফিলিয়েট লিংক শেয়ার করে মার্কেটিং করতে পারবেন।

যেমন মনে করুন, আপনি daraz এর একটি পণ্য নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট লিখে আপনার প্রচুর ফলোয়ার্স থাকা ফেসবুক পেজে শেয়ার করলেন এবং সেই পোস্টে affiliate link বসিয়ে দিলেন।

তাহলে সেই লিংকে ক্লিক করে যদি আপনার কোন ফলোয়ার্স সেই প্রোডাক্টটি ক্রয় করে তার জন্য আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণে Commission পাবেন।

সঠিক পদ্ধতিতে কাজ করতে পারলে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করা খুবই সহজ এবং লাভজনক।

৭. ওয়েবসাইট বিক্রি করে আয়

আপনি যদি ঘরে বসে সহজে বাড়তি টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে ওয়েবসাইট বিক্রি করে আপনি প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা খুবই সহজ। আপনি ডোমেইন (domain) এবং হোস্টিং (hosting) কিনে নিজেই একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করে ফেলতে পারবেন।

ব্লগ তৈরি করা হয়ে গেলে আপনার কাজ হলো ব্লগে আর্টিকেল পাবলিশ করা। আপনাকে ৩০ থেকে ৪০ টি high quality এবং SEO friendly আর্টিকেল ব্লগে পাবলিশ করতে হবে।

প্রতিটি আর্টিকেল ১০০০ শব্দের লিখলে আপনার তাড়াতাড়ি Google AdSense approval পেতে সুবিধা হবে।

৩০ থেকে ৪০ টি আর্টিকেল লেখার পর আপনার ব্লগে Google adsense এর জন্য apply করবেন। যদি আপনার আর্টিকেলগুলোতে copyright না থাকে এবং unique আর্টিকেল হয় তাহলে খুব সহজেই গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন।

এরপর আপনার ওয়েবসাইট এবং গুগল এডসেন্স একাউন্ট বিক্রি করার মাধ্যমে ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

ফেসবুকে অনেক গ্রুপ রয়েছে, যেগুলোতে আপনার তৈরি করা ওয়েবসাইট এবং এডসেন্স একাউন্ট নিরাপদে বিক্রি করতে পারবেন। এরকম একটি group হলো Bangladesh Website Marketers (BWM)

মনে রাখবেন, যদি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে search engine থেকে প্রচুর ট্রাফিক বা ভিজিটরস আনতে পারেন, তাহলে সেই ওয়েবসাইটটি আপনি ৩০০ থেকে ৫০০ ডলারে অনায়াসেই বিক্রি করতে পারবেন।

৮. SEO করে আয়

SEO মানে হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization)।

ওয়েবসাইট বা ব্লগে লেখা আর্টিকেল SEO এর মাধ্যমে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে নিয়ে আসা হয়।

SEO করে আপনি দুইটি পদ্ধতিতে অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন।

যেমন: আপনি যদি একজন SEO expert হয়ে থাকেন তাহলে নিজের এক বা একাধিক মাইক্রো নিস ব্লগ (micro niche blog) খুলে ব্লগে SEO optimization করে প্রচুর organic traffic আনতে পারবেন।

এরপর গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন দেখিয়ে কিংবা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

প্রচুর পরিমাণে search volume থাকা low competitive keywords গুলো নিয়ে ব্লগ তৈরি করে গুগলের first page এ rank করানো একজন এসইও এক্সপার্ট এর পক্ষে তেমন কোন কঠিন কাজ নয়।

এছাড়াও আপনি বিভিন্ন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে একজন এসইও এক্সপার্ট হিসেবে কাজ করতে পারবেন।

তাছাড়াও আপনি freelancing website গুলোতেও SEO expert হিসেবে কাজ করে অনলাইনে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

৯. অনলাইনে পড়িয়ে (Online Teacher) ইনকাম

আমাদের আশেপাশে দেখা যায়, অনেক শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে গিয়ে কিংবা কোচিং সেন্টার (coaching center) খুলে পড়াচ্ছেন।

এভাবে খুব ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাছাড়া স্টুডেন্টদের বাসায় গিয়ে গিয়ে পড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক সময় এবং অর্থ যাতায়াতেই খরচ হয়ে যায়।

এছাড়াও একটি নতুন কোচিং সেন্টার বানানোর ক্ষেত্রে ভালো জায়গার ব্যবস্থা করাটাও সহজ ব্যাপার নয়।

এক্ষেত্রে বাংলাদেশে অনলাইন টিচিং (online teaching) এর কাজটি অধিক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের পর থেকে বাংলাদেশে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

এই পদ্ধতিতে শিক্ষকরা ঘরে বসে class নিতে পারছেন এবং স্টুডেন্টরাও বাড়িতে বসে ভালো ভালো শিক্ষকদের কাছে শেখার সুযোগ পাচ্ছে।

তাই আপনার যদি শিক্ষকতা সম্পর্কে ভালো অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনিও ঘরে বসে ছাত্রছাত্রীদের পড়িয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

প্রথমের দিকে আপনার বিভিন্ন রকম বাধা বিপত্তি আসতে পারে, স্টুডেন্ট পেতে সমস্যা হতে পারে, কিন্তু পরবর্তীতে আপনি অনেক সুবিধা পেতে পারবেন।

১০. ছবি বিক্রি করে ইনকাম

আপনি কি ছবি তুলতে খুব পছন্দ করেন? ঘন্টার পর ঘন্টা ছবি তুলতে ব্যয় করে থাকেন? যদি হ্যাঁ, তাহলে আপনি আপনার তোলা ছবি অনলাইনে বিক্রি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

এখন বাড়িতে বসেই ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে photo বিক্রি করে যথেষ্ট ভালো আয় করা সম্ভব।

এক্ষেত্রে আপনি ক্যামেরা বা মোবাইল দিয়ে বিভিন্ন আকর্ষণীয় ছবি তুলতে পারেন। যদি আপনি ভালো photo editing জানেন, তাহলে আপনার তোলা ছবিকে খুব সহজেই অধিক আকর্ষণীয় করে তুলতে পারবেন।

একজন ফটোগ্রাফার প্রতিটি high quality ছবি ১০ থেকে ৫০০ ডলারে বিক্রি করে থাকেন।

ইন্টারনেটে অনেকগুলো stock image website রয়েছে, যেগুলো ছবি করে ইনকাম করা সুযোগ দিয়ে থাকে। এরকম কয়েকটি ওয়েবসাইট হলো: Getty Images, Adobe Stock, Dreamstime, Shutterstock ইত্যাদি।

মনে রাখবেন, বর্তমান সময়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই বিভিন্ন ব্যানার তৈরি এবং অন্যান্য কাজে মানুষ স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটগুলো থেকে ছবি ক্রয় করে থাকে।

অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়: FAQ

Q. অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার সহজ পদ্ধতি কি কি?

বর্তমান সময়ে অনলাইন থেকে টাকা আয় করার সবচেয়ে সহজ এবং লাভজনক পদ্ধতি হলো কনটেন্ট রাইটিং এবং ইউটিউব চ্যানেল। এছাড়াও ওয়েবসাইট বিক্রি করে খুব সহজেই ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করা যায়।

Q. কিভাবে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করা যায়?

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার অনেক উপায় রয়েছে। যেমন: ব্লগিং, ইউটিউব, অনলাইনে ছবি বিক্রি, এফিলিয়েট মার্কেটিং, ওয়েবসাইট বিক্রি করে ইনকাম ইত্যাদি।

Q. অনলাইন থেকে সহজে টাকা ইনকাম করতে কি কি লাগবে?

Online income করার জন্য আপনার অবশ্যই একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল বা কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে। সেই সাথে আপনি যে কাজ করতে চান সেই কাজের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

Q. অনলাইনে ফ্রি টাকা ইনকাম করা যায়?

অনলাইনে ফ্রি টাকা ইনকামের অনেকগুলো উপায় রয়েছে যেগুলোর দ্বারা কোন বিনিয়োগ ছাড়াই ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।

আমাদের শেষ কথা

টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে কি কি আছে অথবা ঘরে বসে কিভাবে সহজে টাকা আয় করা যায় এ বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে আশা করি আপনারা জানতে পেরেছেন।

অনলাইন টাকা ইনকাম করার যে পদ্ধতিগুলো আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে এগুলো সহজ, কার্যকরী এবং অধিক লাভজনক।

আপনার যদি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ না থাকে তবুও স্মার্টফোন দিয়ে আপনি এই কাজগুলো করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করবেন। আর আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোন প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।

Similar Posts

4 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *