বাংলাদেশে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সেরা ১০টি উপায়
আজকের যুগে ইন্টারনেট শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং এটি ঘরে বসে অনলাইনে টাকা ইনকামের দারুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশেও অনলাইনে টাকা আয় করার বিভিন্ন পদ্ধতি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বর্তমানে অনেকেই পড়াশোনা, চাকরি বা ব্যবসার পাশাপাশি অনলাইনে আয় করছেন। বাংলাদেশে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার উপায়গুলো জেনে আপনিও বাড়িতে বসে ফ্রিতে টাকা ইনকাম করা শুরু করতে পারেন।
বাংলাদেশে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার উপায় সমূহ
ডিজিটাল প্রযুক্তির এই যুগে ঘরে বসে টাকা আয় করার নানা ধরনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে বেশ কিছু টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট বা অনলাইনে ইনকাম বাংলাদেশী সাইট রয়েছে যেগুলোতে কোনো ধরনের ডিপোজিট ছাড়াই টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
আজকের আর্টিকেলে আমি বাংলাদেশে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার যেসব উপায়ের বিষয়ে আলোচনা করতে চলেছি এগুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই প্রতিদিন ১০০০ টাকা ইনকাম করা সম্ভব। আপনার কাছে একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার থাকলেই আপনি এইসব উপায়ে বাড়িতে বসে ইন্টারনেট থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।
তবে এইসব উপায়ে টাকা ইনকামের জন্য আপনাকে অবশ্যই ধৈর্যশীল হতে হবে এবং সময় দিয়ে কাজ করতে হবে। আপনি একজন স্টুডেন্ট হলেও নিচে বলা উপায়গুলোর মাধ্যমে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করতে পারবেন।
তাহলে চলুন বাংলাদেশে অনলাইনে টাকা আয় করার সেরা ১১টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
১. ব্লগিং করে অনলাইনে আয়
বর্তমান সময়ে ঘরে বসে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার সবচেয়ে সহজ এবং লাভজনক উপায় হলো ব্লগিং। লেখালেখি করা আপনার শখ হয়ে থাকলে ব্লগিং এর মাধ্যমে আপনি দ্রুত অনলাইনে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করার জন্য দরকার হয় একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ। নিজের একটি অনলাইন ব্লগ বানানোর পর সেখানে নিয়মিত নতুন নতুন আর্টিকেল লিখতে হয়।
আপনি নিজের পছন্দের যেকোনো টপিক নিয়ে ব্লগে লেখালেখি করতে পারেন। যে বিষয় বা টপিকের উপর আপনার ভালো জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা রয়েছে, সেই টপিক নিয়ে আর্টিকেল লিখলে দ্রুত সফলতা অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
ওয়েবসাইট বা ব্লগে প্রতিদিন ভালো পরিমাণে ট্রাফিক বা ভিজিটর আসতে শুরু করলে আর্টিকেলে গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ব্লগে প্রচুর ভিজিটর থাকলে গুগল এডসেন্স ছাড়াও এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
আপনি জানলে অবাক হবেন যে, শুধুমাত্র ব্লগিং করে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা সম্ভব। আমি নিজেও ঘরে বসে আমার ব্লগে লেখালেখি করে মাসে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করছি। তাই বাংলাদেশে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সেরা উপায় হিসেবে আপনি নিশ্চিন্তে ব্লগিংকে বেছে নিতে পারেন।
২. ইউটিউব থেকে ইনকাম
ব্লগিং এর পাশাপাশি বর্তমানে অনলাইন থেকে টাকা ইনকামের আরেকটি সহজ উপায় হলো ইউটিউব। আপনি যদি ভিডিও তৈরি করতে ভালোবাসেন এবং ক্যামেরার সামনে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তাহলে ইউটিউব আপনার জন্য একটি লাভজনক ক্যারিয়ার অপশন।
ইউটিউবে শিক্ষামূলক, প্রযুক্তি, বিনোদনমূলক, খাদ্য, প্রোডাক্ট রিভিউ, টিউটোরিয়াল, রান্নার রেসিপি ইত্যাদি যেকোনো ধরনের ভিডিও আপলোড করা যায়। আপনার যে বিষয়ের ওপর ভালো দক্ষতা রয়েছে সেই বিষয়ের ওপর ভিডিও বানিয়ে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার জন্য প্রয়োজন হবে একটি ইউটিউব চ্যানেল। আপনার বানানো ভিডিওগুলো নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করতে হবে। নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে থাকলে ধীরে ধীরে চ্যানেলে ভিউস এবং সাবস্ক্রাইবার বাড়তে থাকবে।
আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম পূরণ হয়ে গেলে ইউটিউব মনিটাইজেশনের মাধ্যমে ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।
বাংলাদেশে অনেক বিখ্যাত ইউটিউবার রয়েছে। তারা শুধুমাত্র ইউটিউব থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে। অর্থ উপার্জনের জন্য তাদের আলাদাভাবে আর কোনো চাকরি বা ব্যবসা করার দরকার হচ্ছেনা।
ভালো মানের ভিডিও তৈরি করলে আপনিও ইউটিউবে বিখ্যাত হয়ে উঠতে পারবেন এবং ইউটিউবকে আপনার ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে পরিশ্রম অবশ্যই করতে হবে।
৩. ফ্রিল্যান্সিং করে আয়
আজকাল বাংলাদেশে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হলো ফ্রিল্যান্সিং। প্রত্যেকের কাছেই ফ্রিল্যান্সিং এর বিষয়টি সর্বাধিক পরিচিত। বিশেষ করে স্কুল, কলেজের স্টুডেন্ট বা তরুণ তরুণীরা পড়ালেখার পাশাপাশি পার্ট টাইম কাজ করে ইনকাম করার জন্য ফ্রিল্যান্সিংকে বেছে নেয়।
ফ্রিল্যান্সিং এমন এক ধরনের পেশা, যেখানে নিজের ইচ্ছামতো কাজ করা যায়। এখানে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কাজ পাওয়া যায়। ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, কনটেন্ট রাইটিং, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এই ধরনের কাজগুলো শিখতে হবে।
নানা ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলো আপনি বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে পেতে পারবেন। কয়েকটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হলো Freelancer, Fiverr, Upwork ইত্যাদি।
কাজ পাওয়ার জন্য প্রথমে যেকোনো একটি সাইটে একাউন্ট তৈরি করতে হবে। এরপর প্রোফাইল ভালোভাবে সাজিয়ে গিগ তৈরি করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটে গিগ হলো, আপনি যে সার্ভিসটি প্রদান করবেন সেই সার্ভসের বিষয়ে সকল তথ্য পোস্ট আকারে পাবলিশ করা হয়। গিগে কাজের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া যায়। বায়ার গিগের মাধ্যমে সার্ভিস অর্ডার করে থাকে। এসব সাইট থেকে সরাসরি ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে পেমেন্ট নেওয়া যায়।
আপনি চাইলে বিশ্বস্ত বাংলাদেশি অনলাইন ইনকাম সাইটেও (Dealancer) সহজ অনলাইন সার্ভিসগুলো প্রদান করে ইনকাম করতে পারবেন। এখানে আপনি ওয়েব ডিজাইন, গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল সার্ভিস সহ নানা ধরনের পরিষেবা দিতে পারবেন। এই অনলাইন ইনকাম বাংলাদেশি ওয়েবসাইট থেকে পেমেন্ট বিকাশের মাধ্যমে নিতে পারবেন।
৪. ওয়েবসাইট বানিয়ে টাকা আয়
আপনি যদি একজন ওয়েব ডেভেলপার হয়ে থাকেন, তাহলে ভালো মানের ওয়েবসাইট বানিয়ে বিক্রি করতে পারেন। আপনি জানলে অবাক হবেন যে, একটি ওয়েবসাইট লাখ লাখ টাকায় বিক্রয় করা সম্ভব। একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিয়মিত কনটেন্ট লিখে সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভালো পরিমাণে ট্রাফিক আনতে পারলে সেই ওয়েবসাইট অনেক বেশি টাকায় বিক্রয় করা যায়।
আর ওয়েবসাইট বানানোর জন্য যে আপনাকে ওয়েব ডেভেলপার হতে হবে সেরকম কোনো কথা নেই। আপনি ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে নিজেই ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। এছাড়া ব্লগার ব্যবহার করে খুব সহজে সম্পূর্ণ ফ্রিতেই নিজের একটি ব্লগ তৈরি করা সম্ভব।
আপনি চাইলে ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স এপ্রুভ করিয়ে সেল করতে পারেন। বর্তমানে একটি নতুন এডসেন্স এপ্রুভ হওয়া ওয়েবসাইট খুব সহজেই ১০০ থেকে ৩০০ ডলারে বিক্রয় করা যায়। আর যদি প্রতিদিন ভালো পরিমাণে ভালো পরিমাণে অর্গানিক ট্রাফিক আপনার ব্লগে থাকে, তাহলে সেই ওয়েবসাইটের দাম লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
ওয়েবসাইট ক্রয় বিক্রয়ের জন্য আপনি বাংলাদেশি প্লাটফর্ম ডিল্যান্সার ব্যবহার করতে পারেন। এখান থেকে আয় হওয়া টাকা সরাসরি ব্যাংক একাউন্ট, বিকাশ, নগদ কিংবা রকেটে পেমেন্ট নিতে পারবেন।
৫. কনটেন্ট রাইটিং করে আয়
ঘরে বসে অনলাইনে অর্থ উপার্জন করার একটি অন্যতম উপায় হলো কনটেন্ট রাইটিং। এই কাজটি আপনি পার্ট টাইম হিসেবে করা যায়। অনেক ওয়েবসাইটের মালিকরা তাদের ওয়েবসাইটের জন্য কনটেন্ট রাইটার খুঁজে থাকে। আবার যারা অনলাইনে কনটেন্ট বানিয়ে টাকা ইনকাম করে থাকে তাদের অনেক কনটেন্ট এর দরকার হয়। এরকম ওয়েবসাইটে আপনি কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ করতে পারেন।
বাংলাদেশে আর্টিকেল লিখে টাকা আয় করার কয়েকটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হলো ট্রিকবিডি, টেকটিউন্স, অর্ডিনারি আইটি, বোর বাংলা, গ্রাথোর ইত্যাদি। এসব সাইটে বাংলা ভাষায় আর্টিকেল লিখে ইনকাম করা যায়।
এছাড়াও ইংরেজি ভাষায় কনটেন্ট লেখার দক্ষতা থাকলে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কনটেন্ট রাইটিং সার্ভিস প্রদান করে ইনকাম করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে প্রতিটি ভালো মানের জন্য ১০ থেকে ২০ ডলার পে করা হয়ে থাকে।
মার্কেটপ্লেসের বাইরে কনটেন্ট রাইটিং এর কাজ পাওয়ার জন্য আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্লগিং এবং ওয়েবসাইট রিলেটেড বিভিন্ন গ্রুপে যুক্ত হতে হবে। এসব গ্রুপ থেকে আপনি খুব সহজেই ক্লায়েন্ট পেতে পারবেন।
রিলেটেড আর্টিকেল – লেখালেখি করে আয় করার সেরা ১০টি ওয়েবসাইট
৬. এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম
এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন এক ধরনের মার্কেটিং কৌশল যেখানে আপনাকে বিভিন্ন ব্রান্ড বা কোম্পানির প্রোডাক্ট প্রোমোশন করতে হবে। তাদের প্রোডাক্ট বা পণ্য বিক্রি করিয়ে দিতে পারলে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টা্কা কমিশন দেওয়া হবে।
বিভিন্ন প্লাটফর্মের সাহায্যে এফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়। যেমন – ওয়েবসাইট বা ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল বা পেইজ, ইউটিউব চ্যানেল ইত্যাদি। এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য প্রথমে যেকোনো একটি সাইটের এফিলিয়েট প্রোগামে রেজিস্টার করতে হবে। এরপর সেই সাইটের বিভিন্ন প্রোডাক্টের লিংক সংগ্রহ করে আপনার ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা সোশ্যাল মিডিয়া পেইজে শেয়ার করতে হবে।
লোকেরা যাতে আপনার লিংকে ক্লিক করে প্রোডাক্ট ক্রয় করে, এজন্য যাবতীয় তথ্য সহকারে প্রোডাক্টের লিংক পোস্ট করতে হবে। যখন কেউ সেই লিংকে ক্লিক করে প্রোডাক্ট ক্রয় করবে, তখন আপনাকে প্রোডাক্টের মূল্যের ওপর নির্দিষ্ট হারে কমিশন দেওয়া হবে। এভাবে প্রতিটি সেলের বিনিময়ে আপনি কমিশন পেতে থাকবেন।
যদি আপনার ওয়েবসাইটে প্রচুর ট্রাফিক থাকে অথবা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার লাখ লাখ ফলোয়ার থাকে, তাহলে আপনি এখনই এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন। বাংলাদেশে অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যাদের এফিলিয়েট প্রোগ্রাম রয়েছে। বাংলাদেশের জনপ্রিয় কিছু এফিলিয়েট প্রোগ্রাম হলো রকমারি, দারাজ, বিডিশপ, টেন মিনিট স্কুল, সহজ অ্যাফিলিয়েট ইত্যাদি।
৭. অনলাইনে কোর্স বিক্রি করে আয়
যদি আপনার নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের ওপর দক্ষতা থাকে তাহলে সেই বিষয়ে ভিডিও কোর্স বানিয়ে সেটা অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে লোকেরা অনলাইনে তাদের নিজস্ব কোর্স বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছেন।
আপনার ভালো দক্ষতা রয়েছে এরকম যেকোনো বিষয়ের ওপর কোর্স বানাতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনার ওয়েবসাইট তৈরি এবং ডিজাইনের দক্ষতা থাকলে সেটা নিয়ে ভিডিও টিউটোরিয়াল তৈরি করতে পারেন। এরপর অনলাইনে কোর্সটির প্রচার বা মার্কেটিং করতে হবে। যত বেশি পরিমাণে লোকেরা আপনার কোর্স কিনবে আপনার ইনকাম তত বেশি হবে।
অনলাইন কোর্স বিক্রি আজকাল বাংলাদেশে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এখানে কোনো ধরনের ইনভেস্ট বা বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই কিংবা প্রোডাক্ট ডেলিভারির ঝামেলা নেই। শুধুমাত্র কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সাহায্যেই কোর্স তৈরি করা যায়।
৮. গ্রাফিক্স ডিজাইন করে আয়
ডিজিটাল প্রযুক্তির এই যুগে বিভিন্ন ব্রান্ড বা কোম্পানি গুলো তাদের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসের ডিজাইন করার জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনার খুঁজে থাকে। তাই মার্কেটপ্লেসে গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করে ঘরে বসে ইনকাম করার জন্য আগে আপনাকে ভালোভাবে কাজ শিখতে হবে। গ্রাফিক্স ডিজাইনের অন্তর্ভূক্ত কাজগুলো হচ্ছে লোগো ডিজাইন, ব্যানার ও পোস্টার ডিজাইন, প্রোডাক্ট প্যাকেজিং ডিজাইন, টি-শার্ট ডিজাইন ইত্যাদি। এইসব কাজ করার জন্য আপনাকে Adobe Photoshop, Adobe Illustrator, Canva, Figma এই ধরনের সফটওয়্যার গুলোর ব্যবহার ভালোভাবে শিখতে হবে।
আপনি চাইলে এনিমেশন বানানোর কাজ শিখতে পারেন। কেননা মার্কেটপ্লেসে এই কাজের ভালো চাহিদা রয়েছে এবং আকর্ষণীয় এনিমেশন ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড করেও ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করার সুযোগ থাকবে। কারণ ইউটিউবে এনিমেশন ভিডিওগুলো অধিক জনপ্রিয়।
৯. ড্রপশিপিং করে আয়
বাংলাদেশে সহজে অনলাইন থেকে আয় করার আরেকটি দুর্দান্ত উপায় হলো ড্রপশিপিং। এটি হলো এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে পণ্য উৎপাদন না করেই পণ্য সেল করা যায়।
ড্রপশিপিং বিজনেস করার জন্য প্রয়োজন হবে একটি অনলাইন ই-কমার্স স্টোর এর, যেখানে পণ্যগুলো ছবি এবং সম্পূর্ণ ডিটেইলস সহকারে সাজানো থাকবে। এরপর সেই ই-কমার্স ওয়েবসাইটের মার্কেটিং করতে হবে। সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় প্রোডাক্টের প্রচার প্রচারণা চালাতে হবে।
এরপর যখন সেই ই-কমার্স স্টোরে ক্রেতারা প্রোডাক্ট অর্ডার করবে, তখন ক্রেতার ঠিকানা আপনাকে প্রোডাক্ট উৎপাদনকারী বা সরবরাহকারীর কাছে পাঠাতে হবে। সেই সাথে প্রোডাক্টের মূল্য পরিশোধ করতে হবে। প্রোডাক্ট প্যাকেজিং এবং ডেলিভারির দায়িত্ব আপনাকে নিতে হবেনা।
আপনি অনলাইন স্টোরে নিজের পছন্দমতো প্রোডাক্টের মূল্য সেট করতে পারবেন এবং এভাবে প্রোডাক্ট সেল করে লাভবান হতে পারবেন। ড্রপশিপিং ব্যবসায় সফল হতে পারলে বা একটি জনপ্রিয় ই-কমার্স স্টোর প্রতিষ্ঠা করলে আপনি প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
১০. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) করে আয়
এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন একটি ওয়েবসাইট বা অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের মাধ্যমে ওয়েবসাইট বা ব্লগকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেইজে র্যাংক করানো হয়ে থাকে। ফলে ওয়েবসাইটে প্রচুর ভিজিটর আসে এবং ই-কমার্স ওয়েবসাইটের সেল বেড়ে যায়।
তাই বিভিন্ন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান তাদের ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করানোর জন্য এসইও এক্সপার্ট এর খোঁজ করে থাকে। বর্তমানে এসইও এক্সপার্টদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। একজন এসইও এক্সপার্ট হিসেবে আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এবং মার্কেটপ্লেসের বাইরে উভয় জায়গায় কাজ করতে পারবেন।
তবে এসইও করে আয় করার জন্য আগে আপনাকে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইওজেশন এর যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয়গুলো ভালোভাবে শিখতে হবে। এই কাজের জন্য অবশ্যই আপনাকে প্রচুর সময় দিতে এবং ধৈর্য্য থাকতে হবে।
বাংলাদেশে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার বিষয়ে প্রায়শই জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
সহজে বাংলাদেশে টাকা ইনকাম করার কয়েকটি সেরা উপায় হচ্ছে একটি ব্লগ শুরু করা, রাইটার হওয়া, কনটেন্ট ক্রিয়েটর হওয়া, ফ্রিল্যান্সিং, ওয়েবসাইট তৈরি, ড্রপশিপিং ব্যবসা ইত্যাদি।
মেয়েদের জন্য ঘরে বসে ইনকামের অনেক উপায় রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু উপায় হলো কনটেন্ট রাইটিং, ব্লগিং, এফিলিয়েট মার্কেটিং, ফেসবুক অথবা ইউটিউব ভিডিও বানানো ইত্যাদি।
মোবাইলের মাধ্যমে আয় করার অন্যতম উপায় হলো ব্লগিং, কনটেন্ট রাইটিং, ভিডিও কনটেন্ট তৈরি, অনলাইনে ছবি বিক্রি ইত্যাদি।
বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইকমার্স সাইট দারাজে সেলার হিসেবে পণ্য বিক্রি করে আয় করা যায়।
লেখালেখি করে আয় করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার নিজের একটি ব্লগ শুরু করে বা অন্যের ব্লগে আর্টিকেল রাইটার হিসেবে কাজ করে ঘরে বসে লেখালেখি করে আয় করা যায়।
উপসংহার
তাহলে বন্ধুরা, বাংলাদেশে কিভাবে ঘরে বসে টাকা ইনকাম করা যায় এ বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে আশা করি আপনারা ভালোভাবে জানতে পেরেছে। উপরে বলা সবগুলো উপায় বাংলাদেশে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার জন্য শতভাগ কার্যকর এবং প্রমাণিত।
তবে একটা বিষয় মনে রাখবেন, সফলতা অর্জনের জন্য অবশ্যই আপনার ধৈর্য্য থাকতে হবে এবং পরিশ্রম করতে হবে। এসব উপায়ে কোনোভাবেই রাতারাতি কোটিপতি হওয়া সম্ভব নয়। তাই আপনার পছন্দের কাজটি সিলেক্ট করে সেই কাজের বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা শুরু করে দিন।
অবশ্যই পড়ুন –