About
আপনি কি ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করার জন্য আপনার প্রথম ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান?
যদি হ্যাঁ, তাহলে আমি আপনাকে এ বিষয়ে সহায়তা করতে চাই। কারণ আজ থেকে ৬ বছর আগে ২০১৯ সালে আমিও আপনার জায়গাতে ছিলাম।
বছরের পর বছর ধরে সফলতা এবং ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে আমি শিখেছি কিভাবে একটি তৈরি করতে হয়, ওয়েবসাইটে সার্চ ইঞ্জিন থেকে অর্গানিক ট্রাফিক কিভাবে আনতে হয় এবং কিভাবে Google AdSense, Ezoic ইত্যাদি এড নেটওয়ার্কের বিজ্ঞাপন (advertisements) ওয়েবসাইটে দেখিয়ে টাকা ইনকাম করতে হয়।
যখন আমি আমার প্রথম ব্লগে গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়েছিলাম এবং প্রথম দিনে $0.80 ইনকাম করেছিলাম, তখন আমি কতটা আনন্দিত ছিলাম তা আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না।
হেলো, আমার নাম মোহাম্মদ আবু সফিক, এবং আমি Trusted Income Ways ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা।

আমার অনলাইন জগতের শুরু থেকে এই পর্যন্ত কিভাবে আসলাম সেই পুরো গল্পটা এখন আমি আপনাদের বলবো।
যখন আমি স্কুলে ছিলাম তখন দেখতাম চাকরিজীবী লোকেরা সকাল ১০ টায় অফিসে যেত এবং বিকাল ৫ টা পর্যন্ত অফিসের কাজ করে বাড়ি ফিরতো। তারা সপ্তাহে মাত্র একদিনই ছুটি পেয়ে থাকে।
তবে এভাবে জীবনযাপনে তারা খুশি থাকলেও আমি ভাবতাম আমার দ্বারা এমনটা সম্ভব নয়।
তাই আমার ভাবনা ছিলো অর্থ উপার্জনের জন্য এমন কোনো কাজ বেছে নিতে হবে যা পৃথিবীর যেকোনো স্থানে বসে করা যাবে।
তখন আমি দশম শ্রেণিতে পড়ি। আমি নিজের এন্ড্রয়েড মোবাইলের গুগল সার্চ বারে গিয়ে সার্চ করলাম “বাংলাদেশে ঘরে বসে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়?“
এরপর আমি সার্চ ফলাফলে আসা কয়েকটি ব্লগ পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়লাম। সেই ব্লগ পোস্টগুলো থেকে জানতে পেরেছিলাম যে ব্লগিং, ফ্রিল্যান্সিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি মাধ্যমে ঘরে বসে অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করা যায়।
ব্লগপোস্ট গুলোতে প্রত্যেকটি বিষয় পয়েন্ট আকারে উল্লেখ করা ছিলো। তারপর আমি আলাদা আলাদা করে প্রত্যেকটি বিষয় নিয়ে গুগলে সার্চ করলাম এবং কনটেন্টগুলো পড়তে লাগলাম।
অনলাইনে অর্থ উপার্জনের এরকম প্রত্যেকটি বিষয়ে আমি কিছুটা ধারণা অর্জন করেছিলাম বিভিন্ন ব্লগ কনটেন্ট গুলো পড়ে।
এক পর্যায়ে আমি ফেসবুকে গিয়েও এসব বিষয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করলাম। একসময় আমি Online Income রিলেটেড একটি ফেসবুক গ্রুপ থেকে TrickBD ওয়েবসাইটের বিষয়ে জানতে পারলাম।
TrickBD বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রযুক্তি ব্লগগুলোর তালিকার শীর্ষে থাকা একটি ব্লগ। এটাও জানলাম যে এই সাইটে গিয়ে একাউন্ট তৈরি করে কনটেন্ট লিখে ইনকাম করা যায়।
এরপর আমি TrickBD ওয়েবসাইটে চলে গেলাম। সাইটে প্রবেশ করেই আমার ইন্টারফেস বা ডিজাইনটা অনেক ভালো লেগেছিলো। হোমপেইজ স্ক্রল করতেই অনেকগুলো কনটেন্ট এর শিরোনাম দেখতে পেলাম। বেশিরভাগ কনটেন্টই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের বিভিন্ন দরকারি টিউটোরিয়াল, প্রোডাক্ট রিভিউ, ফ্রি ইন্টারনেট টিপস ইত্যাদি।
এরপর থেকে নিয়মিত ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে থাকলাম। সাম্প্রতিক পোস্ট সেকশনে যেসব নতুন নতুন পোস্ট আসতো সবগুলোই আমি পড়তাম।
এভাবে দিনে ২ বার বা ৩ বার করে ট্রিকবিডি ভিজিট করা শুরু করলাম। সাইটটির প্রতি অন্যরকম একটা ভালোলাগা কাজ করতো।
একদিন ট্রিকবিডির বিভিন্ন ক্যাটাগরি ঘুরে দেখতে লাগলাম। একসময় আমার চোখে পড়লো, “মাত্র ৫ মিনিটে Wapkiz দিয়ে নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করুন”।
এটা দেখে সত্যি আমি অনেক আনন্দিত হয়েছিলাম। এত কম সময়ে ওয়েবসাইট আমিও তৈরি করতে পারবো এটা ভেবে আমার চোখ কপালে উঠে গিয়েছিলো।
অনেক কৌতুহল নিয়ে টিউটোরিয়ালটি পড়তে লাগলাম। পোস্টটিতে লেখার মাঝে মাঝে স্ক্রিনশট যুক্ত করা ছিলো ভালোভাবে বোঝানোর জন্য। পোস্টটিতে আমি পুরো প্রসেসটা ভালোভাবেই বুঝেছিলাম।
এরপর টিউটোরিয়ালে দেখানো পদ্ধতিতে Wapkiz (free website builder platform) এ আমার ইমেইল অ্যাড্রেস এবং অন্যান্য তথ্য দিয়ে registration করলাম এবং একটি সিম্পল ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেললাম।
ওয়েবসাইট ডিজাইনের জন্য যেসকল HTML Code দরকার ছিলো সবগুলোই ঐ টিউটোরিয়ালে দেওয়া ছিলো। আমি শুধু কোডগুলো কপি করে জায়গামতো বসিয়ে দিয়েছিলাম। এভাবে আমার প্রথম তৈরি করা ওয়েবসাইটের ডিজাইন করে ফেললাম।
এরপর Waphosts, Xtgem এর মতো ফ্রি ওয়েবসাইট বিল্ডার প্লাটফর্মগুলোতেও আমি ওয়েবসাইট তৈরি করেছিলাম এবং টুকটাক ডিজাইনের কাজ করেছিলাম। এসব প্লাটফর্মের ধারণাও আমি ট্রিকবিডি থেকে পেয়েছিলাম।
এভাবে আমার অনলাইন এবং ইন্টারনেট এর উপর আমার কৌতুহল দিন দিন বাড়তে থাকলো। ধীরে ধীরে Techtunes সাইটের বিষয়ে জানতে পারলাম এবং টেকটিউনস এরও অনেক বড় ফ্যান হয়ে গেলাম
মনে মনে ভাবতে লাগলাম, যদি ট্রিকবিডি এর মতো আমারো একটা ওয়েবসাইট থাকতো, তাহলে কতই না ভালো হতো।
তারপর একদিন ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) এর বিষয়ে জানতে পারলাম। ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরির পদ্ধতি নিয়ে ট্রিকবিডিতে টিউটোরিয়াল পেলাম। সেখানে জানলাম যে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট বানাতে হলে আমাকে ডোমেইন নেম (domain name) এবং ওয়েব হোস্টিং (web hosting) ক্রয় করতে হবে।
তখন আমি ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখে একটি ডোমেইন নেম রেজিষ্ট্রেশন করেছিলাম TopTuneBD.xyz এবং একটি ছোটো হোস্টিং প্যাকেজ (১ জিবি) কিনেছিলাম।
এরপর টিউটোরিয়াল দেখে দেখে হোস্টিং সি-প্যানেল (cPanel) থেকে ওয়ার্ডপ্রেস সফটওয়্যার install করেছিলাম।
এভাবে আমার প্রথম ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেললাম। এরপর এডমিন প্যানেলে অনেক ঘাটাঘাটি করে থিম (theme) এবং প্লাগিন (plugin) install করা শিখলাম। প্রথম ওয়েবসাইটে আমি Trickbd theme ইনস্টল করেছিলাম। ফলে সাইটটি দেখতে হুবহু ট্রিকবিডির মতো হয়েছিলো।
এরপর আমি অনেক খুশি মনে ব্লগপোস্ট লেখা শুরু করলাম। একের পর এক পোস্ট লিখে সাইটে পাবলিশ করতে থাকলাম। যেহেতু নতুন অবস্থায় ছিলাম তাই আমার কনটেন্ট এর কোয়ালিটি একদমই ভালো হচ্ছিলো না। যখন যেভাবে মন চাইছিলো তখন সেভাবে পোস্ট লিখেছিলাম এবং ব্লগে আপলোড দিচ্ছিলাম। এ কারণে গুগল সার্চ ইঞ্জিন আমার পোস্টগুলোকে ইন্ডেক্স করেনি।
তখন পর্যন্ত আমার ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার কোনো মেথড জানা ছিলো না। প্রথম ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরির কিছুদিন পর আমি গুগল এডসেন্স (Google AdSense) এর সাথে পরিচিত হলাম এবং জানতে পারলাম যে ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন শো করিয়ে টাকা ইনকাম করা যায়। তবে এজন্য ওয়েবসাইটে সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভিজিটর নিয়ে আসতে হবে। আর ভিজিটর আনার জন্য ব্লগপোস্টগুলোকে গুগলে ইন্ডেক্স থাকতে হবে এবং টপ পজিশনে র্যাংক (rank) হতে হবে। এছাড়া ওয়েবসাইট থেকে উপার্জন করা সম্ভব নয়।
তো এটা জানার পর আমাকে প্রথম ওয়েবসাইটে কাজ করা বাদ দিতে হয়েছিলো। যদিও আমি ৬ মাসের মতো সেই ওয়েবসাইটটিতে বিভিন্ন বিষয়ে কনটেন্ট পাবলিশ করেছিলাম। কিন্তু কনটেন্টগুলো গুগলে শো না হওয়ার কারণে আমি ঐ সাইটে কাজ করা ছেড়ে দিলাম।
এরপর নিরাশ না হয়ে আমি খোঁজা শুরু করলাম যে কিভাবে ভালো মানের কনটেন্ট লেখা যায় এবং কিভাবে কনটেন্ট লিখলে সেটা গুগলে শো হবে।
প্রথমে বাংলা ভাষাতে এ বিষয়ে সার্চ করে কয়েকটি কনটেন্ট পড়লাম। সেসব কনটেন্টে আমি Search Engine Optimization (SEO) এর বিষয়ে ধারণা পেলাম। বুঝতে পারলাম যে ব্লগপোস্ট কে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় শো করাতে হলে হাই কোয়ালিটিসম্পন্ন SEO friendly কনটেন্ট লিখতে হবে।
এরপর ইংরেজিতে SEO নিয়ে সার্চ করলাম এবং ShoutMeLoud, Backlinko, Hubspot ব্লগের কনটেন্ট পড়লাম। এরপর এসইও নিয়ে আমার একটা পরিষ্কার ধারণা চলে এলো। অনেক ভালোভাবে বুঝতে পারলাম যে ব্লগিং করে অর্থ উপার্জন করতে হলে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর বিকল্প নেই। On Page SEO এবং Off Page SEO এর বিষয়েও মোটামুটি একটা ধারনা পেয়েছিলাম সেখান থেকে।
এরপর আমি আমার দ্বিতীয় বাংলা ব্লগ শুরু করলাম। ডোমেইন কিনলাম TechLover.xyz, সাথে একটি হোস্টিং প্যাকেজও ক্রয় করলাম। প্রথম অবস্থায় আমি .xyz TLD ব্যবহার করেছিলাম, কেননা তখন স্টুডেন্ট অবস্থায় .com ডোমেইন কেনার মতো সামর্থ্য ছিলো না।
ব্লগ তৈরি করলাম। এই ব্লগের জন্য আমি Generatepress theme বেছে নিয়েছিলাম। এরপর আমি টেকনোলজি, পড়াশোনা, গল্প, কবিতা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার ব্লগে লিখতে শুরু করলাম। ২৫ টি কনটেন্ট পাবলিশ করার পর আমি এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করেছিলাম এবং ব্লগটিকে এডসেন্স এর সাথে যুক্ত করেছিলাম।
কিন্তু তখন এডসেন্স আমার ব্লগকে অনুমোদন করেনি। আমি নিয়মিত কনটেন্ট লিখতে থাকলাম। এভাবে মোট ৪৫ টি কনটেন্ট আপলোড করা পর্যন্ত আমি ৪ বার এডসেন্স এর জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এডসেন্স আমার সাইটকে রিজেক্ট করে দিয়েছিলো। ৫০ টি কনটেন্ট পাবলিশ করে ৫ম বারের মতো আবেদন করেছিলাম এবং আবেদনের ৫ দিন পর আমি মেইল পেলাম, “Your site is now ready to serve adsense ads and start earning.“ তখন ব্লগের বয়স ছিলো ৭ মাস।
এই মেইলটি পেয়ে আমি যে কতটা খুশি হয়েছিলাম তা আপনাদের বলে বোঝানো যাবে না।
কিন্তু এই সাইটেও যে কনটেন্টগুলো আমি পাবলিশ করেছিলাম সেগুলো অতটা ভালো মানের ছিলো না। ফলে আমি সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভালো পরিমাণে আমার ব্লগে আনতে পারিনি। প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ জন ভিজিটর আমার ব্লগে আসতো এবং এডসেন্স একাউন্টে প্রতিদিন 0.5-0.10$ আর্নিং হতো। কোনো কোনোদিন আর্নিং শূন্য থাকতো।
এরকম ফলাফল পাওয়ার পর আমি এই ব্লগের আশাও অনেকটা ছেড়ে দিয়েছিলাম এবং ব্লগটি আমি ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলাম।
এরপর আমি আবার মনোযোগ দিয়ে SEO শিখতে থাকি। Neil Patel এর ব্লগ এবং ইউটিউব চ্যানেল থেকেও এসইও নিয়ে অনেক জ্ঞান আহরণ করি।
এরপর আরও কয়েকটি ব্লগ আমি তৈরি করেছিলাম এবং আশানুরূপ ফলাফল না পেয়ে সেল করে দিয়েছি। নিচে ব্লগগুলোর বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে বলে দিচ্ছি।
- Banglatrick24.com ডোমেইন দিয়ে আমি আমার তৃতীয় ব্লগ শুরু করেছিলাম এবং ৬ মাসে ৪২ টি কনটেন্ট লিখে আমি এডসেন্স অনুমোদন পেয়েছিলাম। ১ বছরের মাথায় ব্লগে সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভালো ট্রাফিক না আসায় এই ব্লগটিও আমি বিক্রি করে দিয়েছিলাম ১২০০০ টাকায়।
- আমার চতুর্থ ব্লগের নাম ছিলো StatusBangla.xyz. এখানে আমি সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য বিভিন্ন স্ট্যাটাস, ক্যাপশন, এসএমএস ইত্যাদি পোস্ট করেছিলাম। তবে এই ব্লগেও আমি সফলতা পাইনি এবং ১ বছর কাজ করার পর ছেড়ে দিয়েছিলাম।
- আমার পঞ্চম বাংলা ব্লগের নাম ছিলো itjano.xyz. এই ব্লগে আমি ৪৫ টি কনটেন্ট লেখার পর এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়েছিলাম। যখন এডসেন্স এপ্রুভাল পাই তখন ব্লগটির বয়স ছিলো ৪ মাস। এই ব্লগে কাজ করার সময় আমার কনটেন্ট এর কোয়ালিটি আগের ব্লগগুলোর তুলনায় ভালো ছিলো। ফলে আমি সার্চ ইঞ্জিন থেকে কিছু অর্গানিক ট্রাফিক আনতে সক্ষম হয়েছিলাম। এই ব্লগে প্রতিদিন সার্চ ইঞ্জিন থেকে ১০০-১৫০ জন ট্রাফিক আসতো। ব্লগটিতে আমি “লাইভ ফুটবল খেলা দেখার সফটওয়্যার” নিয়ে একটি কনটেন্ট লিখেছিলাম যেটা গুগলে প্রথম পেইজে র্যাংক হয়েছিলো এবং ২০২২ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা চলাকালে এই কনটেন্ট এর মাধ্যমে আমার ব্লগে একদিনে ৩০০০ পর্যন্ত ট্রাফিক এসেছিলো। সেসময় আমার এডসেন্স এর ইনকামও ভালো হচ্ছিলো। এই ব্লগ থেকে আমি মোট ২৫০ ডলার ইনকাম করেছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে ট্রাফিক কমে যায় এবং এই ব্লগটিও আমি সেল করে দিয়েছিলাম। ব্লগটি আমি ১ লক্ষ টাকায় সেল করেছিলাম। অর্থের এই পরিমাণটা একজন ছাত্র হিসেবে আমার জন্য অনেক ছিলো।
- এরপর আমার ষষ্ঠ বাংলা ব্লগ হিসেবে স্টার্ট করেছিলাম SofolBlogger.com. এই ব্লগে আমি ৫ মাসে গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়েছিলাম এবং ১০ মাস পর ব্লগটি ৩৭০০০ টাকায় বিক্রি করেছিলাম।
ছয়টি ব্লগে কাজ করার পর আমার কনটেন্ট কোয়ালিটি যথেষ্ট উন্নত হয়েছিলো এবং আমি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, গুগল র্যাংকিং ফ্যাক্টর, গুগল অ্যালগরিদম, ক্রলিং, ইনডেক্সিং, র্যাংকিং ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়ে অনেক ভালো জ্ঞান অর্জন করেছিলাম।
পাশাপাশি আমি নানা ধরনের অনলাইন প্যাসিভ আর্নিং প্লাটফর্মগুলোতে সময় দিয়েছিলাম। উদাহরণস্বরূপ, এড দেখে, গেম খেলে, কুইজ খেলে, ক্যাপচা টাইপিং করে, রেফার করে ইত্যাদি কাজ করে প্যাসিভ ইনকাম করার বেশ কিছু জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এবং অ্যাপসে কাজ করেছি এবং ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করেছি।

তারপর আমি ভাবলাম মানুষকে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার ক্ষেত্রে সাহায্য করবো। আমার মতো যারা ঘরে বসে ডিপোজিট ছাড়া ফ্রি টাকা ইনকাম করতে আগ্রহী, তাদের গাইডলাইন দেওয়ার জন্য একটি ব্লগ তৈরি করবো যেখানে আমি আমার অভিজ্ঞতা (experience) অনুযায়ী সকল আর্টিকেল লিখবো।
লোকদের সাথে আমার জানা Online Income Tricks গুলো শেয়ার করার জন্য আমি TrustedIncomeWays.com ডোমেইন নেমটি ক্রয় করলাম এবং আমার সপ্তম বাংলা ব্লগ স্টার্ট করলাম।
আমার এই ব্লগে প্রতিদিন গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভালো পরিমাণে অর্গানিক ট্রাফিক আসছে এবং গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে ডেইলি ভালো পরিমাণে ইনকাম করছি। ব্লগটি থেকে আমি প্রতি মাসে ১৫০ থেকে ২০০ ডলার ইনকাম করছি যা বাংলাদেশী টাকায় হয় ১৮০০০ থেকে ২৪০০০ টাকা।


গুগল এডসেন্স এর আগস্ট ২০২৪ এবং অক্টোবর ২০২৪ এর আর্নিং রিপোর্টঃ


সফল ব্লগার ব্লগের অর্গানিক ট্রাফিকঃ


Trusted Income Ways ব্লগের অর্গানিক ট্রাফিকঃ


দিনের পর দিন রাতের পর রাত পরিশ্রম করে SEO, keyword research, content writing ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেছি এবং সেই জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে আমি আজ একটি সাকসেসফুল ব্লগ তৈরি করতে পেরেছি।

আপনিও যদি আমার মতো স্টুডেন্ট অবস্থায় পড়াশোনার পাশাপাশি অনলাইনে আয় করতে চাচ্ছেন, কিংবা চাকরি বা ব্যবসার পাশপাশি অনলাইন থেকে প্যাসিভ ইনকাম জেনারেট করার কথা ভাবছেন, তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় আছেন।
বাড়িতে বসে কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন দিয়ে কাজ করে খুব কম সময়ে কিভাবে ইনকাম করতে পারবেন এ বিষয়ে অনেক আর্টিকেল আপনি আমার এই Trusted Income Ways ব্লগে পেয়ে যাবেন। সবগুলো আর্টিকেলই আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা অনুযায়ী লেখা এবং প্রতিটি আর্নিং মেথড আমি নিজে ব্যবহার করে ইনকাম করেছি।
বিভিন্ন আর্টিকেলে যেসব অনলাইন আর্নিং অ্যাপস ও ওয়েবসাইটগুলোর বর্ণনা আমি দিয়েছি, সেই ওয়েবসাইট ও অ্যাপসগুলো আমি টেস্ট করে দেখেছি এবং অনলাইন থেকে রিভিউ, রেটিং দেখে তারপর আমি সেগুলো আপনাদের সাজেস্ট করেছি।
এছাড়াও অনলাইনে আয়ের বিষয়ে আমি আপনাদের গাইড করার জন্য সবসময় প্রস্তুত। আপনি যেকোনো ধরনের পরামর্শ বা সমস্যার জন্য কন্টাক্ট ফর্ম এর মাধ্যমে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। অথবা সরাসরি info@trustedincomeways.com এই ইমেইলে মেইল করতে পারেন।
আপনি চাইলে আমাকে ফেসবুকে ফলো করতে পারেন।