ফ্রি টাকা ইনকাম apps | ২০২৫ সালের সেরা ৯টি ইনকাম অ্যাপস

অনলাইন থেকে কিভাবে ফ্রিতে টাকা ইনকাম করা যায় এ বিষয়ে যদি আপনি জানতে চাচ্ছেন, তাহলে একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন। কেননা আজকের আর্টিকেলে আমরা জনপ্রিয় ফ্রি টাকা ইনকাম apps গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি।
এমনিতে বর্তমানে ঘরে বসে ফ্রি টাকা ইনকাম করার অনেক উপায় রয়েছে। তবে আজকাল বিনিয়োগ ছাড়া অনলাইন ইনকাম অ্যাপস গুলোর জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে – এই অ্যাপগুলো কি সত্যিই কার্যকর? আসলেই কি ঘরে বসে মোবাইল ব্যবহার করে কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই টাকা ইনকাম করা সম্ভব?
এর উত্তর হলো – হ্যাঁ, অবশ্যই সম্ভব। এমন বেশ কিছু রিয়েল টাকা ইনকাম করার অ্যাপস রয়েছে যেগুলো আমাদের ফ্রিতে ডলার ইনকাম করার সুযোগ দিয়ে থাকে।
আজকের আর্টিকেলে আমরা এরকম কিছু ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার অ্যাপস সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। এসব অ্যাপসে আপনারা মোবাইল দিয়ে কাজ করে ফ্রি টাকা ইনকাম করে বিকাশে পেমেন্ট নিতে পারবেন।
ফ্রি টাকা ইনকাম apps এর মাধ্যমে আয়
বর্তমানে অনলাইনে ফ্রি টাকা ইনকাম করার জন্য অনেক ধরনের অ্যাপ রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে আয় করা সম্ভব। এসব অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণত কনটেন্ট তৈরি, ছবি আপলোড, ছোট ছোট টাস্ক সম্পন্ন করা, বিজ্ঞাপন দেখা, ভিডিও দেখা, গেম খেলা ইত্যাদির মাধ্যমে ইনকাম করা যায়।
তবে ফ্রি ইনকামের মানে এই নয় যে একদম কোনো পরিশ্রম ছাড়াই টাকা আসবে। সফল হতে হলে আপনাকে নিয়মিত কাজ করতে হবে এবং কিছু নির্দিষ্ট দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
এই ধরনের অ্যাপে আয় করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু দক্ষতা থাকলে কাজ করা সহজ হয়। যেমন, যদি ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে চান, তাহলে ভিডিও এডিটিং ও কনটেন্ট আইডিয়া নিয়ে দক্ষ হতে হবে। ছবি বা ডিজাইন আপলোডের ক্ষেত্রে ফটোগ্রাফি ও গ্রাফিক্স ডিজাইন জানা দরকার।
অন্যদিকে ছোট ছোট টাস্ক ভিত্তিক অ্যাপে সাধারণত বিশেষ কোনো দক্ষতার প্রয়োজন হয় না, শুধু ধৈর্য ধরে কাজ করা লাগে।
এই অ্যাপসগুলো থেকে আয় নির্ভর করে আপনার কাজের ধরন ও পরিশ্রমের ওপর। যদি কনটেন্ট তৈরি বা ফ্রিল্যান্সিংয়ের মতো কাজে দক্ষ হন, তাহলে তুলনামূলকভাবে বেশি আয় করতে পারবেন।
তবে ছোট ছোট টাস্ক বা বিজ্ঞাপন দেখার মাধ্যমে আয় করতে চাইলে প্রতিদিন ১-২ ঘণ্টা কাজ করেও কিছু পরিমাণ টাকা ইনকাম করা যায়, কিন্তু এতে খুব বেশি আয় করা সম্ভব নয়। দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে মাসে ৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা বা তার বেশি ইনকাম করা সম্ভব।
ফ্রি ইনকাম apps গুলোর মাধ্যমে সফল হতে হলে সঠিক প্ল্যাটফর্ম বেছে নেওয়া, ধৈর্য ধরে কাজ করা এবং দক্ষতা বাড়ানো জরুরি। মনে রাখবেন, একদিন বা এক মাসের মধ্যে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করা সম্ভব নয়। তবে নিয়মিত চেষ্টা করলে ভালো পরিমাণ টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
অবশ্যই পড়ুন – মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার সেরা ২৫টি উপায়
ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার অ্যাপস গুলোর তালিকা – ২০২৫
আজকাল ঘরে বসে ইন্টারনেট থেকে টাকা আয় করার জন্য অনেক রিয়েল ইনকাম apps রয়েছে। কিন্তু এসব অ্যাপসে কাজ শুরু করার আগে আপনাকে প্রত্যেকটি অ্যাপসের বিষয়ে ভালোভাবে জানতে হবে।
কোন অ্যাপে কি কাজ করতে হয় এবং কোন অ্যাপসে কাজ করাটা আপনার জন্য তুলনামূলক সহজ হবে এসব কিছু বিস্তারিত জেনে আপনাকে প্লাটফর্ম নির্বাচন করতে হবে। তবে আজকের আর্টিকেলে যেসব online income apps এর বিষয়ে আলোচনা করবো এই অ্যাপসগুলো থেকে আপনি ডিপোজিট ছাড়া টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
তাহলে চলুন সেরা ৮টি ফ্রি টাকা ইনকাম apps এর বিষয়ে জেনে নেয়া যাক, যেগুলো ব্যবহার করে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করা যাবে –
- Telegram
- YouTube
- TikTok
- ShutterStock
- FanFare
- Freecash: Earn Money & Rewards
- Swagbucks
- Paidwork: Make Money
১. ফ্রি টাকা ইনকাম করার অ্যাপ (Facebook)
বর্তমান সময়ে আমরা সকলেই প্রতিদিন ফেসবুক অ্যাপ ব্যবহার করে থাকি। ফেসবুকে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে চ্যাটিং কিংবা পোস্টে লাইক, কমেন্ট করে অনেক সময় নষ্ট করি।
কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন যে, ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করা সম্ভব। ফেসবুক থেকে একাধিক উপায়ে টাকা আয় করা যায়।
আপনি ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি কিংবা ফেসবুকের মাধ্যমে নিজের ব্যবসা পরিচালনা করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
চলুন Facebook app এর মাধ্যমে ইনকাম করার উপায়গুলো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আকারে জেনে নেয়া যাক।
ফেসবুক ভিডিও মনিটাইজেশন
ফেসবুক অ্যাপ থেকে ফ্রি টাকা ইনকামের সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হলো ফেসবুক ভিডিও মনিটাইজেশন।
যদি আপনার একটি ফেসবুক পেইজ থাকে এবং সেখানে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করেন, তাহলে ফেসবুক আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন (advertisements) দেখাবে। যখন লোকেরা আপনার ভিডিও দেখার সময় সেই বিজ্ঞাপনগুলো দেখবে, তখন আপনি ইনকাম করতে পারবেন।
আপনি যেকোনো বিষয়ের ওপর ভিডিও বানিয়ে আপনার পেইজে আপলোড করতে পারেন। যেমন, আপনি যদি কোনো বিষয়ে ভালো পড়াতে পারেন, তাহলে অনলাইন ক্লাস ভিডিও তৈরি করে আপলোড করতে পারেন। এছাড়াও বিনোদনমূলক ভিডিও, টিউটোরিয়াল ভিডিও ইত্যাদি ভিডিও কনটেন্ট বানিয়ে নিয়মিত আপনার পেইজে আপলোড করতে পারেন।
ভিডিও মনিটাইজেশনের মাধ্যমে ইনকাম শুরু হওয়ার জন্য আপনার পেজে কমপক্ষে ১০,০০০ ফলোয়ার এবং বিগত ৬০ দিনে ৬০০,০০০ মিনিট ভিডিও ওয়াচ টাইম থাকতে হবে।
ফেসবুক স্টার
ফেসবুক অ্যাপসের মাধ্যমে ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার আরেকটি নতুন এবং সহজ পদ্ধতি হলো ফেসবুক স্টার। আপনি নিজের ফেসবুক পেইজে নিয়মিত লাইভ স্ট্রিমিং করবেন এবং আপনার ফলোয়াররা আপনাকে স্টার পাঠাতে পারবে।
তাছাড়া ফেসবুকে পোস্ট লিখে কিংবা ছবি আপলোড করলেও সেই পোস্ট বা ছবিতে লোকেরা স্টার পাঠাতে পারেন। প্রতিটি স্টারের বিনিময়ে আপনি $0.01 ইনকাম করতে পারবেন।
রিলেটেড – ফেসবুকে লেখালেখি করে কিভাবে ইনকাম করবেন
ফেসবুকের মাধ্যমে এফিলিয়েট মার্কেটিং
এছাড়াও ফেসবুক গ্রুপ বা পেজ ব্যবহার করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেও টাকা ইনকাম করা যায়। যদি আপনি কোনো অনলাইন শপ বা ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে প্রোডাক্টের অ্যাফিলিয়েট লিংক সংগ্রহ করে আপনার গ্রুপ বা পেইজে শেয়ার করেন এবং কেউ সেই লিংকের মাধ্যমে পণ্য কিনে, তাহলে আপনি কমিশন পাবেন।
অনেক বড় ই-কমার্স সাইট যেমন Daraz, Amazon বা ClickBank অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের সুযোগ দেয়। আপনি এসব সাইটের যেকোনো প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংক শেয়ার করতে পারবেন এবং যত বেশি বিক্রি হবে, তত বেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ফেসবুক অ্যাপ থেকে ইনকাম করা টাকা আপনি আপনার ব্যাংক একাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড কিংবা মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট নিতে পারবেন।
২. ফ্রি টাকা ইনকাম app (Telegram)
টেলিগ্রাম বর্তমানে ফেসবুকের মতোই জনপ্রিয় একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সারা বিশ্বে এক বিলিয়নেরও অধিক মানুষ এই অ্যাপটি ব্যবহার করছে। আপনি চাইলে টেলিগ্রামকে উপার্জনের একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। অনলাইনে ফ্রি টাকা ইনকাম করার জন্য টেলিগ্রাম একটি ভালো অপশন হতে পারে।
Telegram app থেকে আয় করার জন্য প্রথমে আপনাকে গুগল প্লে স্টোর থেকে টেলিগ্রাম অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। এরপর একটি অ্যাকাউন্ট খুলে নিজের একটি চ্যানেল (channel) তৈরি করতে হবে।
তবে টেলিগ্রাম চ্যানেলে ইউটিউবের মতো ভিডিও আপলোড করার দরকার নেই। আপনাকে শুধু একটি চ্যানেল তৈরি করে নতুন নতুন মেম্বার অ্যাড করতে হবে।
টেলিগ্রাম চ্যানেল অনেকটা ফেসবুক গ্রুপের মতোই কাজ করে থাকে। যদি আপনার চ্যানেলে ১০০০ থেকে ৫০০০ জন অ্যাক্টিভ মেম্বার থাকে, তাহলে আপনি সহজেই এখানে থেকে আয় করতে পারবেন।
টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে ফ্রিতে টাকা ইনকামের বিভিন্ন উপায় রয়েছে। আপনি চাইলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং বা স্পন্সরড পোস্ট করে আয় করতে পারেন।
এছাড়াও বিভিন্ন টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হয়ে ছোটখাটো কাজ করেও টাকা ইনকাম করা যায়। যেমন: ফেসবুক লাইক, ইউটিউব সাবস্ক্রাইব, ভিডিও শেয়ার, কমেন্ট করা ইত্যাদি। অনেকে এখানে ফ্রিল্যান্স কাজের সুযোগ দেয় যেগুলো করে ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
৩. ফ্রি টাকা ইনকাম করার অ্যাপ (YouTube)
কোনো রকমের ইনভেস্টমেন্ট ছাড়াই আপনি ইউটিউব অ্যাপ থেকে ফ্রিতে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ইউটিউব থেকে টাকা উপার্জন এর জন্য যাবতীয় কাজ আপনি মোবাইল দিয়েই করতে পারবেন।
ইউটিউব অ্যাপ থেকে ফ্রি টাকা ইনকাম করার জন্য প্রথমে আপনাকে নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল বানাতে হবে। ইউটিউব চ্যানেল বানানোর পর আপনাকে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে হবে।
আপনি যে বিষয়ে অভিজ্ঞ সে বিষয়ের ওপর ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারেন। অর্থাৎ আপনি যে বিষয় বা টপিকের ওপর নিয়মিত নতুন নতুন ভিডিও কনটেন্ট বানাতে পারবেন, সেই বিষয়টিকে চ্যানেলের নিশ হিসেবে সিলেক্ট করবেন।
উদাহরণস্বরূপ, টিউটোরিয়াল ভিডিও, পড়াশোনা রিলেটেড ভিডিও, গেমিং ভিডিও, রান্নার ভিডিও, ফানি ভিডিও ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের টপিকের ওপর ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
প্রতিনিয়ত নতুন নতুন আকর্ষণীয় ভিডিও আপনার চ্যানেলে আপলোড করতে থাকলে ধীরে ধীরে আপনার views এবং subscribers বৃদ্ধি পেতে থাকবে। এভাবে যখন আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘন্টা পূরণ হয়ে যাবে, তখন ইউটিউব মনিটাইজেশন এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আপনার চ্যানেলটি মনিটাইজেশন এর জন্য উপযুক্ত হয়ে থাকলে ইউটিউব টিম আপনার চ্যানেলে মনিটাইজেশন চালু করে দিবে। এরপর আপনি ভিডিওতে গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।
এছাড়াও আপনার চ্যানেলে লাখ লাখ সাবস্ক্রাইবার হয়ে গেলে বিভিন্ন কোম্পানির থেকে sponsorship পেতে পারবেন। আপনার চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের প্রোডাক্টের promotion করার বিনিময়ে তারা আপনাকে অর্থ প্রদান করবে।
এভাবে ইউটিউব চ্যানেল থেকে আপনি ফ্রি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করা সহ যাবতীয় কাজ আপনি YouTube app এর মাধ্যমেই করতে পারবেন।
আর ইউটিউব থেকে উপার্জিত টাকা আপনি সরাসরি ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে তুলতে পারবেন। ইউটিউব থেকে পেমেন্ট পাওয়ার বিষয়ে আপনাকে কোনো চিন্তা করতে হবে না। ইউটিউব গুগলের সার্ভিস। এ কারণে এখান থেকে উপার্জন করা টাকা পেমেন্ট পাওয়ার শতভাগ নিশ্চয়তা রয়েছে। অনেক বাংলাদেশী ইউটিউবার ইউটিউব থেকে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছেন।
রিলেটেড আর্টিকেল – ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম করার ৯টি কার্যকর উপায়
৪. ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার অ্যাপ (TikTok)
বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল অ্যাপগুলোর মধ্যে টিকটক অন্যতম। অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করেন অথচ কখনো টিকটক ইন্সটল করেননি বা কোনো ভিডিও দেখেননি এমন মানুষ পাওয়া খুবই কঠিন। বেশিরভাগ মানুষ এটি শুধু বিনোদনের জন্য ব্যবহার করলেও এখন টিকটক থেকে টাকা আয় করা সম্ভব।
সম্প্রতি টিকটক তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য ইনকামের সুযোগ চালু করেছে। এখন যে কেউ টিকটকের পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত হয়ে ফ্রিতে টাকা ইনকাম করতে পারেন। টিকটক থেকে ফ্রি টাকা ইনকাম শুরু করতে হলে প্রথমে গুগল প্লে স্টোর থেকে টিকটক অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। এরপর জিমেইল বা মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।
টিকটকে ভিডিও আপলোড করে আয় করতে হলে নিয়মিত ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য অবশ্যই হাই কোয়ালিটি ভিডিও বানানোর দিকে ফোকাস করতে হবে। আপনি চাইলে একই ভিডিও ফেসবুক পেজ এবং টিকটকে একসঙ্গে আপলোড করতে পারেন। তবে যেহেতু টিকটক একটি শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্ম, তাই এখানে ১ মিনিটের কম দৈর্ঘ্যের ভিডিওগুলো বেশি জনপ্রিয় হয়।
যদি আপনি নিয়মিত কনটেন্ট তৈরি করেন এবং টিকটকে মনিটাইজেশন পাওয়ার শর্তগুলো পূরণ করেন, তাহলে টিকটক মনিটাইজেশন চালু করে ফ্রি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
এছাড়াও ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং রেফারেল প্রোগ্রামের মাধ্যমে টিকটক থেকে অর্থ উপার্জন করা যায়। তবে এসব মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের জন্য আপনার টিকটক অ্যাকাউন্টে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে ফলোয়ার থাকতে হবে।
টিকটক অ্যাপের মাধ্যমে ইনকামের আরেকটি সেরা উপায় হলো আপনার টিকটক ফ্যানবেসকে ফেসবুক কিংবা ইউটিউব প্লাটফর্মে স্থানান্তরিত করা। আপনি একটি ফেসবুক পেইজ বা ইউটিউব চ্যানেল খুলবেন এবং আপনার টিকটক ফ্যানদের ফেসবুক অথবা ইউটিউবে ফলো করতে বলবেন। এভাবে খুব সহজেই আপনি টিকটক অ্যাপ দিয়ে ভালো পরিমাণে ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন।
৫. ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার অ্যাপ (Shutterstock)
Shutterstock হলো একটি জনপ্রিয় স্টক ফটো, ভিডিও এবং ডিজাইন প্ল্যাটফর্ম যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ফটোগ্রাফার, গ্রাফিক ডিজাইনার এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটররা তাদের ছবি বা ডিজাইন বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
আপনি যদি ভালো মানের ছবি, ভিডিও, ভেক্টর বা ইলাস্ট্রেশন তৈরি করতে পারেন, তাহলে সহজেই Shutterstock Contributor হিসেবে জয়েন করে ফ্রি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
Shutterstock থেকে ইনকাম শুরু করতে প্রথমে Shutterstock Contributor অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। Google Play Store বা Apple App Store থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিজের একটি অ্যাকাউন্ট খুলে নিন। এখানে একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে কোনো ধরনের টাকা দিতে হবে না।
এরপর আপনার তৈরি করা ফটো, ভিডিও বা ডিজাইন Shutterstock এর নিয়ম অনুযায়ী আপলোড করুন। প্রতিটি কনটেন্ট আপলোডের আগে অবশ্যই Shutterstock এর গাইডলাইন মেনে চলতে হবে, যাতে করে ছবি বা ভিডিও সহজেই অনুমোদিত হয়।
আপনার আপলোড করা ছবি যখন কেউ কিনবে, তখন আপনি প্রতিটি ডাউনলোডের জন্য কমিশন পাবেন। সাধারণত একটি ছবি বা ভিডিও একাধিকবার বিক্রি হতে পারে। তাই শাটারস্টক অ্যাপে একটি ভালো মানের কনটেন্ট থেকে দীর্ঘমেয়াদী আয় করা সম্ভব। এখান থেকে আপনার ইনকামের পরিমাণ নির্ভর করবে আপনার কনটেন্টের চাহিদা ও বিক্রির সংখ্যার ওপর।
আপনি চাইলে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ছবি, স্টক ভিডিও, ভেক্টর ডিজাইন ও ইলাস্ট্রেশন আপলোড করে আপনার ইনকামের পরিমাণ বাড়াতে পারেন। Shutterstock থেকে উপার্জন করা টাকা PayPal, Payoneer বা Skrill এর মাধ্যমে উইথড্র করা যায়। তবে টাকা উত্তোলনের জন্য আপনার অ্যাকাউন্টে কমপক্ষে $35 জমা থাকতে হবে।
ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি করলে এবং নিয়মিত আপলোড করলে Shutterstock থেকে মাসে শত বা হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। তাই ফটোগ্রাফারদের জন্য এটি একটি দুর্দান্ত অনলাইন ইনকামের প্ল্যাটফর্ম।
শাটারস্টক প্লাটফর্মে ছবি আপলোড করার জন্য আপনার কোনো ডিএসএলআর ক্যামেরা থাকার দরকার নেই। একটি ভালো মানের ক্যামেরা থাকা স্মার্টফোন থাকলেই আপনি এখানে ছবি বিক্রি করে ফ্রিতে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
৬. ফ্রি টাকা ইনকাম app (FanFare)
FanFare হলো এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা পণ্যের ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করা যায়। আপনি এই অ্যাপের সাহায্যে ঘরে বসে ফ্রি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
FanFare অ্যাপ থেকে আয় করা জন্য প্রথমে আপনার মোবাইলে Google Play Store থেকে FanFare অ্যাপটি ইনস্টল করুন। এরপর আপনার Gmail বা Facebook অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে সাইন আপ করুন। একবার অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে অ্যাপের নিচের ক্যামেরা আইকনে ক্লিক করে আপনার ফোনের ক্যামেরা চালু করুন।
এখন আপনার আশেপাশে থাকা যেকোনো ব্র্যান্ডের পণ্য যেমন মিনারেল ওয়াটারের বোতল, সাবান, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, চেয়ার, কিংবা অন্য কোনো প্রোডাক্টের ভিডিও তৈরি করুন এবং সেটি অ্যাপে আপলোড করুন। ভিডিও তৈরির সময় অবশ্যই ব্র্যান্ডের নাম এবং পণ্যের স্পষ্ট বিবরণ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যত ভালো মানের ভিডিও বানাবেন, তত বেশি পয়েন্ট অর্জন করতে পারবেন।
আপনার আপলোড করা ভিডিওগুলো FanFare টিম দ্বারা রিভিউ করা হবে এবং অনুমোদন পেলে আপনার অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ পয়েন্ট যোগ হয়ে যাবে। এই অর্জিত পয়েন্টগুলো ব্যবহার করে আপনি FanFare প্ল্যাটফর্ম থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্য যেমন পোশাক, গহনা, প্রসাধনী এবং অন্যান্য সামগ্রী অর্ডার করতে পারবেন। এসব পণ্য সরাসরি আপনার ঠিকানায় ডেলিভারি করা হবে।
যদিও FanFare থেকে সরাসরি নগদ অর্থ উত্তোলন করা যায় না, তবে এটি একটি চমৎকার উপায় আপনার সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে পরোক্ষভাবে উপার্জন করার। বিশ্বস্ত কেনাকাটার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে FanFare ইতোমধ্যেই অনেকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই আপনি ঘরে বসে বিনিয়োগ ছাড়াই টাকা ইনকাম করার জন্য এই প্লাটফর্মটি ব্যবহার করতে পারেন।
৭. ফ্রিতে টাকা ইনকাম করার অ্যাপ (Freecash: Earn Money & Rewards)
আপনি যদি স্মার্টফোন ব্যবহার করে সহজ উপায়েম অনলাইনে অর্থ উপার্জন করতে চান, তাহলে Freecash অ্যাপ হতে পারে আপনার জন্য একটি চমৎকার সমাধান। এটি এমন একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম যেখানে ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে পয়েন্ট উপার্জন করতে পারেন। এই পয়েন্যাটগুলো পরবর্তীতে ডলারে রূপান্তরিত করা যায়। Freecash অ্যাপে আপনি নতুন সাইন আপ করলে কিছু টাকা সাইন আপ বোনাস পেয়ে যাবেন।
এই অ্যাপ থেকে উপার্জন শুরু করার জন্য প্রথমে গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। তারপর সহজেই অ্যাকাউন্ট তৈরি করে সাইন আপ করতে পারবেন। এখানে আপনি বিভিন্ন উপায়ে আয় করতে পারবেন। যেমন – গেম খেলে কিংবা অ্যাড দেখে টাকা ইনকাম। এছাড়া প্রতিদিনের বোনাস সংগ্রহ করা এবং রেফারেল প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাড়তি টাকা ইনকামের সুযোগ রয়েছে। এই অ্যাপে থাকা আকর্ষণীয় গেমগুলো খেলে সহজেই পয়েন্ট সংগ্রহ করা যায় এবং এই পয়েন্টসমূহ পরে ডলারে রূপান্তর করা যায়।
Freecash অ্যাপে সবচেয়ে ভালো দিক হলো মাত্র ২ ডলার হলেই আপনি আপনার উপার্জিত টাকা উইথড্র করতে পারবেন। আপনি PayPal, ব্যাংক ট্রান্সফার বা বিটকয়েনের মাধ্যমে সহজেই টাকা তুলতে পারবেন। এটি বিশ্বস্ত এবং জনপ্রিয় একটি অ্যাপ যার গুগল প্লে স্টোরে ১০ মিলিয়নেরও বেশি ডাউনলোড রয়েছে এবং ৪.৪ স্টারের রেটিং পেয়েছে।
আপনার অতিরিক্ত সময় কাজে লাগিয়ে সহজেই উপার্জন করতে চাইলে Freecash অ্যাপ হতে পারে একটি দুর্দান্ত মাধ্যম। তাই দেরি না করে এখনই Freecash অ্যাপ ডাউনলোড করুন এবং পকেট মানি উপার্জন করা শুরু করুন!
৮. ফ্রি টাকা ইনকাম apps (Swagbucks)
Swagbucks হলো একটি জনপ্রিয় এবং বিশ্বস্ত অনলাইন আর্নিং অ্যাপস যা ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন ছোটোখাটো কাজের বিনিময়ে পয়েন্ট উপার্জনের সুযোগ দেয়।
যদি আপনি সহজে অনলাইনে অর্থ উপার্জন করতে চান, তাহলে Swagbucks একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে। এই অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর থেকে ৫ মিলিয়নেরও বেশি বার ডাউনলোড হয়েছে।
অ্যাপটি ইনস্টল করার পর আপনাকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। অ্যাপটিতে রেজিস্ট্রেশন করার পর আপনি বিভিন্ন ধরনের কাজের মাধ্যমে পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।
Swagbucks থেকে উপার্জনের বিভিন্ন উপায়:
- অনলাইন সার্ভে পূরণ করে পয়েন্ট অর্জন
- স্পিনিং এর মাধ্যমে ফ্রিতে টাকা ইনকাম
- বিভিন্ন কুইজের উত্তর দিয়ে ইনকাম
- ভিডিও দেখার মাধ্যমে টাকা ইনকাম
- গেম খেলে উপার্জনের সুযোগ
সংগৃহীত পয়েন্টগুলো ডলারে রূপান্তর করা যায় এবং ৫ ডলার হলেই PayPal-এর মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
Swagbucks এর বিশেষ ফিচারসমূহ:
- নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য সাইন আপ বোনাস
- স্পিন করে সহজে উপার্জনের সুযোগ
- সার্ভে এবং কুইজের মাধ্যমে অতিরিক্ত ইনকামের সুবিধা
- বিনোদনমূলক গেম এবং ভিডিও দেখে আয়ের সুযোগ
আপনার অতিরিক্ত সময়কে কাজে লাগিয়ে টাকা আয় করতে চাইলে Swagbucks হতে পারে আপনার জন্য একটি উপযুক্ত অনলাইন আর্নিং প্ল্যাটফর্ম।
৯. ফ্রি টাকা ইনকাম apps (Paidwork: Make Money)
Paidwork অ্যাপের মাধ্যমে সহজেই অনলাইনে ফ্রি টাকা ইনকাম ইনকাম করা সম্ভব। এই অ্যাপ থেকে টাকা আয় করতে হলে প্রথমে Google Play Store থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিতে হবে এবং একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। এরপর আপনি বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন, যেমন – গেম খেলে, ভিডিও দেখে, সার্ভে পূরণ করে, অনলাইন শপিং করে, রিসিপ্ট স্ক্যান করে এবং মাইক্রো টাস্ক সম্পন্ন করে।
গেম খেলে ইনকামের জন্য নির্দিষ্ট লেভেল পর্যন্ত পৌঁছাতে হয়, আর ভিডিও দেখলে প্রতিটি ভিডিওর জন্য নির্দিষ্ট পয়েন্ট দেওয়া হয়। সার্ভে পূরণ করলে ১০০ থেকে ৫০০ পয়েন্ট পর্যন্ত ইনকাম করা যায়। শপিং করলে ক্যাশব্যাক পাওয়া যায় এবং রিসিপ্ট স্ক্যান করলে অতিরিক্ত পয়েন্ট পাওয়া যায়। এছাড়া রেফারেল লিঙ্কের মাধ্যমে বন্ধুদের এই অ্যাপে যোগ করলে রেফারেল বোনাস ইনকাম করা সম্ভব।
এই অ্যাপ থেকে সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা জমা হলে টাকা উত্তোলন করা যায়, যা PayPal বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তুলতে পারবেন। প্রতিটি কাজের ভিত্তিতে ইনকামের পরিমাণ আলাদা হয়ে থাকে, যেমন – গেম খেলে ৫০ ডলার পর্যন্ত, ভিডিও দেখে ১০ সেন্ট পর্যন্ত এবং মাইক্রো টাস্ক করে ২০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করা যায়।
Paidwork অ্যাপটি ব্যবহার করা একদম সহজ এবং এতে কোনো ইনভেস্টমেন্টের প্রয়োজন নেই। এটি Google Play Store-এ ১০ মিলিয়নেরও বেশি ডাউনলোড হয়েছে এবং ৪.৪ স্টার রেটিং পেয়েছে। আপনার অতিরিক্ত সময় কাজে লাগিয়ে সহজেই উপার্জন করতে চাইলে এটি একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম হতে পারে।
ফ্রি টাকা ইনকাম apps নিয়ে আমাদের শেষ কথা
তাহলে বন্ধুরা, আজকের আর্টিকেলে আমরা ২০২৫ সালের সেরা ৯টি ফ্রি টাকা ইনকাম অ্যাপস আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আর্টিকেলে বলা প্রত্যেকটি অ্যাপস বিশ্বস্ত অনলাইন ইনকাম অ্যাপস হিসেবে পরিচিত। ঘরে বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় অযথা সময় নষ্ট না করে এই অ্যাপসগুলো থেকে আপনি প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।
অবশ্যই পড়ুন –