Home » অনলাইন ইনকাম » ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায়?

ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায়?

আপনি কি একটি ওয়েবসাইট খুলে অনলাইনে অর্থ উপার্জন করার কথা ভাবছেন?

যদি হ্যাঁ, তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন।

কেননা ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায় এই বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে আমি বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি।

ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায়

আপনারা হয়তো ওয়েবসাইট বা ব্লগে আর্টিকেল লিখে টাকা ইনকাম করার ব্যাপারে শুনেছেন। কিন্তু কিভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করে টাকা আয় করা যায় এ বিষয়ে অনেকেই জানেন না।

যদি আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে নিয়মিত ভালো মানের আর্টিকেল লিখেন, তাহলে সেখান থেকে আপনি লাইফটাইম প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন।

এমনিতে অনলাইনে কাজ করে টাকা ইনকাম করার নতুন ওয়েবসাইট গুলোর বিষয়ে আমি আগের আর্টিকেলে আপনাদের বলেছি। আপনি চাইলে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট এবং ডিপোজিট ছাড়া ইনকাম করার ওয়েবসাইট গুলোতে পার্ট টাইম কাজ করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

তবে আপনি চাইলে নিজের একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে সেখানে লেখালেখি করে প্রতি মাসে ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

কিছুদিন আগেও ওয়েবসাইট খুলে শুধু ইংরেজি আর্টিকেল লিখলে মনিটাইজ পাওয়া যেতো। কিন্তু বর্তমানে আপনি বাংলা আর্টিকেল লিখেও মনিটাইজেশন পেতে পারবেন।

তাহলে চলুন ওয়েবসাইট বানিয়ে টাকা আয় করার বিষয়ে স্টেপ বাই স্টেপ ভালোভাবে জেনে নিই।

ওয়েবসাইট কি?

ওয়েবসাইট হলো ইন্টারনেটে এক বা একাধিক ওয়েবপেজের সমষ্টি, যেগুলো কোনো নির্দিষ্ট ডোমেইন নামের অধীনে থাকে।

ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের তথ্য, পরিষেবা বা কনটেন্ট প্রদান করা হয় এবং এগুলো ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহার করে দেখা যায়। ওয়েবপেজে বিভিন্ন রকমের ডিজিটাল কনটেন্ট যেমন টেক্সট, ইমেজ, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি থাকে।

ওয়েবসাইট বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন,

  • Search Engine Website
  • Social Media Website
  • Video Sharing Website
  • Personal Website
  • E-commerce Website
  • News Website
  • Portfolio website

ওয়েবসাইটের উদাহরণ হিসেবে গুগল, ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি উল্লেখ করা যেতে পারে।

আপনি এখন আমার যে ওয়েবসাইটটি ভিজিট করছেন, এটি আমার পার্সোনাল ব্লগ ওয়েবসাইট।

বর্তমানে বাংলা ভাষায় সবচেয়ে বড় টেকনোলোজি সাইট হলো টেকটিউনস এবং ট্রিকবিডি। এগুলো হচ্ছে টেকনোলজি সংক্রান্ত সেরা বাংলা ওয়েবসাইট বা ব্লগ, যেখানে বিভিন্ন লেখকেরা প্রযুক্তি বিষয়ে আর্টিকেল লিখে তাদের জ্ঞান শেয়ার করে।

ওয়েবসাইট খুলে কি সত্যি টাকা আয় করা যায়?

আপনারা যারা প্রথম ওয়েবসাইট খুলে লেখালেখি শুরু করবেন ভাবছেন, তাদের মাথায় এই প্রশ্নটি অবশ্যই আসতে পারে যে, ওয়বসাইট খুলে কি সত্যি টাকা ইনকাম করা সম্ভব?

দেখুন, বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ লোকেরা ওয়েবসাইট বা ব্লগ বানিয়ে সেখানে লেখালেখি করে Google AdSense এবং অন্যান্য মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছেন।

আমি নিজেও আমার ওয়েবসাইট থেকে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে প্রতি মাসে ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করছি।

আপনি যদি একটি blog বা website বানিয়ে সেখানে প্রতিনিয়ত ভালো মানের আর্টিকেল পাবলিশ করেন এবং সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভালো পরিমাণে ভিজিটর আপনার সাইটে আনতে পারেন, তাহলে আপনিও সেই ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ উপার্জন করা শুরু করে দিতে পারবেন।

একটি ওয়েবসাইটে যদি প্রচুর পরিমাণে traffic বা visitors থাকে, তাহলে সেই ওয়েবসাইট থেকে সাধারণ কোনো চাকরি বা ব্যবসার চেয়েও বেশি টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

ওয়েবসাইট থেকে টাকা আয় করার জন্য কী করতে হবে?

আপনি যদি একটি অনলাইন ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে ঘরে বসে টাকা ইনকাম করার কথা ভাবছেন, তাহলে সবচেয়ে প্রথমে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।

আপনি চাইলে wordpress.com, blogger.com এবং wix.com এই ধরনের free website builder platform গুলো ব্যবহার করে সম্পূর্ণ ফ্রিতেই নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। এই প্লাটফর্ম গুলো আপনাকে ফ্রি হোস্টিং এবং একটি ফ্রি সাবডোমেইন প্রদান করবে।

তাছাড়া আপনি চাইলে প্রিমিয়াম ডোমেইন এবং ওয়েব হোস্টিং কিনে ওয়েবসাইট বানাতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু টাকা অবশ্যই ইনভেস্ট বা খরচ করতে হবে।

অনেক বাংলাদেশী সেরা ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানি রয়েছে যেগুলো থেকে আপনি নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী ডোমেইন এবং হোস্টিং প্যাকেজ ক্রয় করতে পারবেন এবং বাংলাদেশী পেমেন্ট মেথড যেমন- বিকাশ, নগদ, রকেট ইত্যাদি ব্যবহার করে পেমেন্ট করতে পারবেন।

আপনি ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা খরচ করেই আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি ডোমেইন হোস্টিং প্যাকেজ কিনতে পারবেন।

Domain এবং hosting এর সাহায্যে একটি ওয়েবসাইট বানানোর আগে আগে আপনাকে এইসব বিষয়ে ভালো ধারণা অর্জন করতে হবে। আপনি গুগল কিংবা ইউটিউবে সার্চ করে ওয়েবসাইট সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন।

আপনার যদি ল্যাপটপ বা কম্পিউটার না থাকে তাহলেও আপনি এন্ড্রয়েড মোবাইলের মাধ্যমে ওয়েবসাইট খুলতে পারবেন এবং কাজ করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

ওয়েবসাইট থেকে অর্থ উপার্জনের জন্য কী লাগবে?

যদি আপনি নিজের ওয়েবসাইট থেকে টাকা উপার্জন করতে চান, তাহলে শুধুমাত্র ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে একতি ওয়েবসাইট তৈরি করে বসে থাকলে এমনি এমনি আপনার টাকা ইনকাম হবে না।

ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকামের জন্য আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগে নিয়মিত ভালো মানের এবং কাজের আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে।

এমন বিষয় নিয়ে আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে যেগুলো লোকেরা গুগল সার্চ ইঞ্জিনে প্রতিনিয়ত সার্চ করতে থাকেন। যে বিষয় বা টপিকের ওপর আর্টিকেল লিখবেন সেই টপিকের ওপর ভালোভাবে রিসার্চ করে সব ধরনের তথ্য আর্টিকেলে অন্তর্ভূক্ত করার চেষ্টা করতে হবে।

যখন নির্দিষ্ট একটি টপিকের উপর সম্পূর্ণ ডিটেইলস সহকারে আর্টিকেল লিখে আপনার ব্লগে পাবলিশ করবেন, তখন সেই আর্টিকেলটি গুগলের কাছে high quality content হিসেবে প্রাধাণ্য পাবে।

ফলে গুগল তার search result এর টপ পজিশনে আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগকে দেখাবে। আর এভাবে আপনি ভালো পরিমাণে ভিজিটর আপনার ব্লগে পেতে পারবেন।

মনে রাখবেন, ওয়েবসাইট থেকে টাকা আয় করার জন্য প্রথম এবং প্রধান শর্ত হলো, আপনার ওয়েবসাইটে উল্লেখযোগ্য পরিমান ট্রাফিক বা ভিজিটর অবশ্যই থাকতে হবে। যদি আপনার ওয়েবসাইটে প্রতিদিন কিছু পরিমাণ ভিজিটর আনতে না পারেন, তাহলে ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করাটা আপনার জন্য কঠিন এবং প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

সহজভাবে বলতে গেলে, ভিজিটর হলো একটি ওয়েবসাইটের প্রাণ। ইউটিউব চ্যানেল থেকে টাকা ইনকামের জন্য যেমন প্রচুর views এবং subscribers এর দরকার হয়, তেমনি একটি ওয়েবসাইট থেকে উপার্জনের জন্যও ভালো পরিমাণে ভিজিটর থাকা আবশ্যক।

একটি ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায়?

কিভাবে ওয়েবসাইট বানিয়ে টাকা আয় করা যায়

আমি আগেই বলেছি ওয়েবসাইট থেকে অর্থ উপার্জন করতে হলে আপনার নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। কিভাবে একটি ওয়েবসাইট বানাবেন সে বিষয়ে আর্টিকেলের শেষে আমি আপনাদের দেখিয়ে দিবো। তার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক কী কী উপায়ে একটি ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করা যায়?

১. গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে আয়

বর্তমান সময়ে ওয়েবসাইট থেকে টাকা আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় advertising network হলো গুগল এডসেন্স (Google AdSense)। বেশিরভাগ ব্লগার বা আর্টিকেল রাইটাররা তাদের ওয়েবসাইট বা ব্লগ থেকে অর্থ উপার্জনের জন্য গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে থাকেন।

গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের আর্টিকেলে এবং বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপন (advertisements) দেখিয়ে টাকা ইনকাম করা যায়।

আপনার ওয়েবসাইট থেকে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে টাকা ইনকামের জন্য প্রথমে আপনাকে ৩০ থেকে ৪০ টি ভালো ,মানের আর্টিকেল লিখে আপনার ব্লগে পাবলিশ করতে হবে। এরপর আপনাকে একটি গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করতে হবে এবং আপনার ওয়েবসাইটকে এডসেন্স একাউন্টের সাথে কানেক্ট করতে হবে।

এডসেন্স এ আবেদন করার কিছুদিনের মধ্যেই গুগল আপনার ওয়েবসাইটটি পর্যালোচনা করে দেখবে। এরপর গুগল এডসেন্স আপনাকে মেইল করে জানিয়ে দিবে সাইটটি গুগল অ্যাডসেন্স এর জন্য উপযোগী কি না।

কনটেন্ট কোয়ালিটি, ওয়েবসাইট নেভিগেশন, ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ইত্যাদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে গুগল এডসেন্স আপনার সাইটকে অনুমোদন দিয়ে দিবে এবং আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করবে।

এরপর যখন লোকেরা আপনার লেখা আর্টিকেলগুলো পড়ার সময় আর্টিকেলে দেখানো বিজ্ঞাপনগুলো দেখবে এবং সেগুলোতে ক্লিক করবে, তখন প্রতিটি ক্লিকের বিনিময়ে আপনার এডসেন্স একাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা হতে থাকবে। আপনার একাউন্টে ১০০ ডলার জমা হয়ে গেলে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে সেটা পেমেন্ট নিতে পারবেন।

মনে রাখবেন, আপনার লেখা অবশ্যই ইউনিক হতে হবে। ইন্টারনেটের অন্যান্য ব্লগ থেকে লেখা হুবহু কপি করে আপনার আর্টিকেলে ব্যবহার করলে সেটা কপিরাইট আর্টিকেল হিসেবে গণ্য হবে এবং গুগল এডসেন্স আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন দেখাতে চাইবে না।

২. এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়

ওয়েবসাইট থেকে টাকা আয় করার জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং বর্তমান সময়ে অন্যতম জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। Affiliate Marketing হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আপনি অন্য কোম্পানির প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করিয়ে দিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

যেকোনো ধরনের প্রোডাক্ট আপনি আপনার ব্লগের মাধ্যমে প্রোমোট করতে পারেন।

ধরুন, আপনি মোবাইল ফোনের যেকোনো একটি যন্ত্রাংশের রিভিউ বিষয়ক একটি কনটেন্ট লিখে আপনার ব্লগে পাবলিশ করলেন। এই আর্টিকেলে আপনি কোনো একটি অনলাইন ইকমার্স কোম্পানির এফিলিয়েট প্রোগ্রাম থেকে সেই মোবাইল যন্ত্রাংশ্টির লিংক নিয়ে আপনার আর্টিকেলে যোগ করে দিলেন।

এরপর যখন লোকেরা সেই আর্টিকেল পড়ার জন্য আপনার ব্লগে আসব এবং এফিলিয়েট লিংকে ক্লিক করে সেই জিনিসটি ক্রয় করবে, তখন সেই কোম্পানি থেকে আপনাকে কিছু কমিশন দেওয়া হবে। আর এই পদ্ধতিকে বলা হয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।

যদি আপনার ওয়েবসাইটে সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভালো পরিমাণে অর্গানিক ভিজিটর আনতে পারেন তাহলে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

অনেক ই-কমার্স ওয়েবসাইটে এফিলিয়েট প্রোগ্রাম নামে একটি আলাদা সেকশন রয়েছে, সেখানে register করে আপনি বিভিন্ন প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংক সংগ্রহ করতে পারেন। এই লিংকগুলো আপনার আর্টিকেলের বিভিন্ন জায়গায় যুক্ত করে প্রোডাক্টের promotion করতে পারেন।

বিভিন্ন ধরনের এফিলিয়েট প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে আপনি আলাদা আলাদা হারে কমিশন পেতে পারবেন। কোনো কোনো এফিলিয়েট সাইট ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন দিয়ে থাকে। অর্থাৎ আপনি যদি ১০০০ টাকা দামের একটি জিনিস বিক্রি করিয়ে দিতে পারেন তাহলে আপনি ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত কমিশন পেতে পারবেন।

৩. নিজের ডিজিটাল স্কিল বিক্রি

আপনার যদি বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল স্কিল থাকে তাহলে আপনি নিজের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সেগুলো বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে যেমন ফ্রিল্যান্সাররা freelancer, upwork, fiverr এইসব ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ওয়েবসাইট গুলোতে ক্লায়েন্টদের বিভিন্ন কাজ করিয়ে দিয়ে ইনকাম করে থাকেন, তেমনি আপনিও নিজের ওয়েবসাইটে দেশি বিদেশি ক্লায়েন্দের বিভিন্ন সার্ভিস বা পরিষেবা দিয়ে ইনকাম করতে পারবেন।

বিভিন্ন ধরনের অনলাইন কাজ যেমন- ডিজিটাল মার্কেটিং, ভিডিও এডিটিং, এসইও, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, কনটেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, এনিমেশন ইত্যাদিতে যদি আপনি দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি অনলাইনে ক্লায়েন্টদের সেবা প্রদান করে ইনকাম করতে পারবেন।

তবে এই কাজটি শুরু করার আগে অবশ্যই আপনাকে আপনার কাজের সাথে জড়িত বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে যুক্ত হতে হবে এবং লোকদের পরিচিতি অর্জন করতে হবে।

আপনাকে নিজের একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে এবং সেখানে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা এবং আপনি আগে কি কি প্রজেক্ট সম্পন্ন করেছেন সেসব কিছু ভালোভাবে তুলে ধরতে হবে।

এতে লোকেরা আপনাকে প্রফেশনাল ডেভেলপার হিসেবে ভেবে নিবে এবং আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।

৪. ওয়েবসাইট বিক্রি করে ইনকাম

আজকাল ওয়েবসাইট বিক্রি করে ইনকাম করাটা অধিক লাভজনক। কেননা অনেকেই আছেন যারা ব্লগিং করার জন্য নিজে ওয়েবসাইট না বানিয়ে কিছু কনটেন্ট এবং ভিজিটর রয়েছে এরকম ওয়েবসাইট অন্যের কাছ থেকে কিনে নেন।

এক্ষেত্রে যদি আপনি একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে সেখানে কিছু কনটেন্ট লিখে এডসেন্স এপ্রুভ করাতে পারেন, তাহলে সেই সাইটটি আপনি সহজেই ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন।

গুগল এডসেন্স এপ্রুভ রয়েছে এরকম ওয়েবসাইটের চাহিদা বর্তমানে প্রচুর রয়েছে। আর যদি আপনার সাইটে ভালো পরিমাণে অর্গানিক ট্রাফিক বা ভিজিটর আনতে পারেন তাহলে খুব সহজেই একটি ওয়েবসাইট আপনি ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।

আমি নিজেও এডসেন্স এপ্রুভ ওয়েবসাইট বিক্রি করে ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করছি। আর এই কাজে আপনাকে খুব বেশি টাকা ইনভেস্ট করতে হবে না। মাত্র ২০০০ টাকা খরচ করলেই আপনি একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারবেন এবং লেখালেখির কাজ শুরু করতে পারবেন।

৫. স্পনসর্ড কনটেন্ট লিখে আয়

যদি আপনার ওয়েবসাইটটি একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর তৈরি করে থাকেন এবং নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসে তাহলে আপনি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কাছ থেকে স্পন্সরড কনটেন্ট পাবলিশ করতে পারেন।

এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলি আপনাকে তাদের পণ্যের প্রচার প্রচারণা করতে বলবে এবং এর বিনিময়ে তারা আপনাকে অর্থ প্রদান করবে।

যদি আপনার ওয়েবসাইট নির্দিষ্ট কোনো নিশের ওপর ভালো গ্রহণযোগ্যতা পায় এবং আপনার আর্টিকেলগুলো লোকেরা অধিক পছন্দ করে থাকে তাহলে স্পনসর্ড কনটেন্ট এর মাধ্যমে আপনি ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

উদাহরণস্বরুপ, যদি আপনার ওয়েবসাইটটি “ব্লগিং ও ওয়েবসাইট” এই নিশের ওপর হয়ে থাকে, তাহলে আপনি বিভিন্ন ওয়েব হোস্টিং কোম্পানির থেকে স্পনসর্ড কনটেন্ট আপনার ওয়েবসাইটে পাবলিশ করতে পারবেন এবং তাদের থেকে টাকা নিতে পারবেন।

একটি ওয়েবসাইট থেকে কত টাকা আয় করা যায়?

অনলাইন ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে কত টাকা আয় করা যায় তা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। কেননা এমন অনেক ব্লগার রয়েছেন যারা প্রতি মাসে কেবল ব্লগিং এর মাধ্যমে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করছেন। আবার অনেকে এখনও এক টাকাও ইনকাম করতে পারেননি।

সহজভাবে বলতে গেলে, একটি ব্লগের মূল চালিকাশক্তি হলো ভিজিটর৷ যত বেশি ভিজিটরস আপনার ব্লগে থাকবে তত বেশি পরিমাণে ইনকাম আপনার হবে। আর ব্লগে ভিজিটরস আনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো high quality কনটেন্ট।

আপনি যদি আপনার ব্লগে ভালো মানের কনটেন্ট লিখতে পারেন, তাহলে সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভিজিটর আনতে সক্ষম হবেন এবং আপনি ব্লগে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ও অন্যান্য উপায়ে টাকা আয় করতে পারবেন।

আমি শুধুমাত্র গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আমার ব্লগ থেকে প্রতি মাসে $200 ডলারেও বেশি ইনকাম করছি।

আমি ব্লগ থেকে কত টাকা আয় করছি

আপনি জানলে অবাক হবেন যে, শুধুমাত্র ব্লগিং করেই প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করা সম্ভব এবং অনেকেই করছেন।

এখন আশা করি একটি ব্লগ থেকে কত টাকা আয় করা যেতে পারে এ বিষয়ে আপনারা জানতে পেরেছেন।

ওয়েবসাইট খুলে টাকা আয়: FAQ’s

Q. ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে কত সময় লাগে?

একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার পর সেখান থেকে টাকা আয় হতে কতদিন সময় লাগবে সেটা নির্দিষ্ট করে বলা যায়না। কেননা এটা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করে। আপনি কিরকম আর্টিকেল লিখছেন, কোয়ালিটি আর্টিকেল লিখছেন কিনা, গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়েছেন কিনা এই বিষয়গুলোর উপর নির্ভর করে থাকে। মোটকথা, প্রতিদিন আপনার ব্লগে কমপক্ষে ২০০ থেকে ৩০০ ভিজিটর আসতে যতদিন সময় লাগবে, ব্লগ থেকে আপনার ইনকাম হতেও ততদিন সময় লাগবে।

Q. ওয়েবসাইট তৈরি করলে কি আয় করা যায়?

হ্যাঁ, ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করা সম্ভব। কিন্তু কেবলমাত্র একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে বসে থাকলে সেখান থেকে রোজগার হবে না। এজন্য আপনাকে নিয়মিত নতুন নতুন আর্টিকেল লিখে ওয়েবসাইটে পাবলিশ করতে হবে এবং গুগল এডসেন্স অনুমোদন পেতে হবে। এরপর আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।

Q. ব্লগিং করে মাসে ৫০০ ডলার আয় করতে কতদিন লাগে?

দেখুন, ব্লগিং করে ৫০০ ডলার আয় করতে কত সময় লাগে এটা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। বিভিন্ন ব্লগারের ক্ষেত্রে এই সময়টা ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে মন দিয়ে ব্লগিং করলে আপনি খুব তাড়াতাড়ি ৫০০ ডলার ইনকাম করতে পারবেন। আমি নিজেই ব্লগিং করে ১ বছরে ১০০০ ডলারেও বেশি ইনকাম করেছি।

Q. বিজ্ঞাপন ছাড়া ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে আয় করা যায়?

যদিও অধিকাংশ ব্লগাররা তাদের ব্লগে গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা আয় করে থাকেন, তবে বিজ্ঞাপন ছাড়াও আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং, পেইড রিভিউ কনটেন্ট, ডিজিটাল স্কিল বিক্রি ইত্যাদি মাধ্যমে ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

Q. ওয়েবসাইট তৈরি করতে কত টাকা লাগে?

Google Blogger ব্যবহার করে ফ্রিতেই ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। তবে আপনি ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে ওয়েবসাইট বানাতে চাইলে বছরে ২ থেকে ৩ হাজার খরচ করেই একটি domain hosting package ক্রয় করতে পারবেন।

Q. কিভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করে টাকা আয় করা যায়?

ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করার অনেক উপায় রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উপায় হলো গুগল এডসেন্স, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, নিজের পণ্য বিক্রি, পেইড রিভিউ কনটেন্ট ইত্যাদি।

সর্বশেষ

তাহলে বন্ধুরা, কিভাবে একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে টাকা ইনকাম করা যায় এই বিষয়ে আশা করি আজকের আর্টিকেলে আপনারা ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।

আপনি যদি ব্লগিং করে আয় করার কথা ভাবছেন, তাহলে বেশি ভেবে দেরি না করে এখনই একটি ব্লগ বানিয়ে লেখালেখি শুরু করে দিন।

কেননা বর্তমানে ঘরে বসে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার জন্য ব্লগিং অত্যন্ত লাভজনক একটি মাধ্যম। এই কাজে সফল হওয়ার সুযোগ প্রচুর রয়েছে।

আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করবেন৷ আর আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *