ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় – (সেরা ১২টি)
কিভাবে ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করা যায় এ বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন?
অথবা ফেসবুক পেজ থেকে টাকা আয় করার কথা ভাবছেন?
যদি হ্যাঁ, তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন।
কেননা জনপ্রিয় সো্শ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জনের জন্য কী কী উপায় রয়েছে সেগুলোর বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে আমি বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি।
বর্তমান ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। এগুলোর মধ্যে ফেসবুক বিশ্বব্যাপী মানুষের সাথে সংযোগ স্থাপন করার পাশাপাশি ব্যবসায়িক সুযোগও সৃষ্টি করেছে।
ফেসবুক বেশ কিছু সিস্টেম চালু করেছে যেগুলোর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তাদের প্রতিভা, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করার সুযোগ পান।
এজন্য আজকাল অনেকেই ফেসবুক ব্যবহার করে আয় করতে অধিক আগ্রহ প্রকাশ করছেন, তবে এখান থেকে আয় করার সঠিক উপাইয় জানেন না। তাই ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার একদম নিশ্চিত এবং কার্যকরী উপায়গুলো আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি।
কিভাবে ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করা যায়?
বর্তমানে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সেরা ওয়েবসাইট গুলোর মধ্যে ফেসবুক অন্যতম একটি সাইট। কেননা ফেসবুক তার ব্যবহারকারীদের অর্থ উপার্জন করার দারুণ সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে।
আজ থেকে কিছু বছর আগেও ফেসবুক থেকে ইনকাম করার কোনো সিস্টেম ছিলো না। কিন্তু বর্তমানে ইউটিউবের মতোই ফেসবুকে মনিটাইজেশন ফিচার চালু হয়েছে, যার মাধ্যমে ইউটিউবের মতো ফেসবুকেও মনিটাইজেশন পদ্ধতির মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা সম্ভব হচ্ছে।
ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর যেমন সেখানে ভিডিও আপলোড করতে হয় এবং চ্যানেলের দ্বারা ইউটিউব মনিটাইজেশন এর শর্তাবলী পূরণ হয়ে গেলে ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত হওয়া যায়।
এরপর চ্যানেলের ভিডিওতে গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন (advertisements) দেখিয়ে টাকা ইনকাম করা যায়।
একইভাবে ফেসবুকের কিছু নিয়ম কানুন বা শর্ত রয়েছে যেগুলো পূরণ করতে পারলে আপনার ফেসবুক পেজ বা প্রোফাইল মনিটাইজ করিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।
বর্তমান সময়ে অনেক তরুণ তরুণী ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের বিনোদনমূলক ভিডিও কনটেন্ট আপলোড করে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করছেন।
তবে, ফেসবুক থেকে যে কেবল ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করার মাধ্যমেই আয় করার যায় তা কিন্তু নয়। এখান থেকে অর্থ উপার্জনের জন্য আরো বেশ কিছু পদ্ধতি বা উপায় রয়েছে।
আমাদের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ওয়েবসাইট ফেসবুক থেকে টাকা রোজগার করার যত ধরনের উপায় রয়েছে তার সবকিছু নিয়ে নিচে আমি আলোচনা করবো।
ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার সেরা ১২টি উপায়
আপনি যদি একজন ছাত্র হয়ে থাকেন এবং পড়ালেখার পাশাপাশি অনলাইনে পার্ট টাইম কাজ করে ইনকাম করার উপায় খুঁজে থাকেন, তাহলে আপনি এই কাজগুলো করতে পারবেন।
ইনকামের উপায় | যা করতে হবে |
---|---|
1. Facebook Star | লাইভ স্ট্রিমিং করতে হবে |
2. In-stream Ads | ফেসবুক পেইজে ভিডিও কনটেন্ট আপলোড করতে হবে |
3. Ads on Reels | রিলস ভিডিও তৈরি করতে হবে |
4. Affiliate Marketing | বিভিন্ন কোম্পানি বা ব্রান্ডের প্রোডাক্টের প্রোমোশন বা মার্কেটিং করতে হবে |
5. Fan Subscription | ফ্যান বা ফলোয়ারদের প্রিমিয়াম কনটেন্ট অফার করতে পারবেন |
6. Facebook Marketplace | মার্কেটপ্লেসে নিজের নতুন বা পুরাতন প্রোডাক্ট লিস্ট এবং বিক্রি করতে পারবেন |
7. Website Traffic | ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর নিতে পারবেন |
8. Run your own business | নিজের ব্যবসা করতে পারবেন |
9. Earn Money as a Group Admin | ফেসবুক গ্রুপের এডমিন হিসেবে ইউজারদের বিভিন্ন অনলাইন ডিল করিয়ে দিয়ে আয় করতে পারবেন |
10. Publish Articles And News on Facebook | ফেসবুকে আর্টিকেল অথবা নিউজ পাবলিশ করে আয় করতে পারবেন |
11. Course Selling | নিজের অনলাইন কোর্স বানিয়ে সেল করতে পারবেন |
12. Offer Online Services | ক্লায়েন্টদের বিভিন্ন রকম অনলাইন কাজ করে বা ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে পারবেন |
1. Facebook Star
ফেসবুক স্টার হলো ফেসবুকের এমন একটি সিস্টেম যার মাধ্যমে আপনি ফেসবুকে live streaming করে ইনকাম করতে পারবেন।
ফেসবুক স্টার ব্যবহার করে ইনকাম করার জন্য প্রথমে আপনাকে নিজের একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করতে হবে, যেখানে আপনাকে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কনটেন্ট শেয়ার করতে হবে। আপনি চাইলে আপনার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলও ব্যবহার করতে পারবেন।
আপনাকে অবশ্যই আপনার পেইজ বা প্রোফাইলে ভালো মানের ভিডিও, লাইভ স্ট্রিম এবং অন্যান্য কনটেন্ট আপলোড করতে হবে। আপনার দর্শকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করতে হবে এবং আপনার আপলোড করা ভিডিও বা পোস্টে এনগেজমেন্ট বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।
ফেসবুক স্টার প্রোগ্রামে যুক্ত হওয়ার জন্য আপনার প্রোফাইল বা পেইজে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফলোয়ার অবশ্যই থাকতে হবে।
যদি আপনার অডিয়েন্সরা আপনার তৈরি করা কনটেন্ট বা লাইভ ভিডিওগুলো পছন্দ করে থাকে তাহলে তারা আপনাকে স্টার পাঠাতে পারে। আর প্রতিটি স্টারের বিনিময়ে আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ফেসবুক থেকে উপার্জন করতে পারবেন।
এছাড়া আপনি আপনার পেইজের মাধ্যমে পেইড স্পন্সরশিপ এবং মার্কেটিং ক্যাম্পেইন চালিয়ে আপনার ইনকাম বাড়াতে পারবেন।
ফেসবুক স্টার প্রোগ্রামের মাধ্যমে রোজগার করার জন্য নিয়মিত এবং মানসম্পন্ন কনটেন্ট তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
2. In-stream Ads
এটি হলো ফেসবুক থেকে টাকা রোজগার করার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায়। বিশ্বজুরে হাজার হাজার কনটেন্ট ক্রিয়েটর এই পদ্ধতিতে ফেসবুকে তাদের ভিডিও কনটেন্ট মনিটাইজ করিয়ে টাকা ইনকাম করছেন।
In stream ads এর মাধ্যমে ফেসবুক থেকে ইনকাম করার জন্য অবশ্যই আপনার আপনাকে ভালো মানের এবং আকর্ষণীয় ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে হবে।
আর আপনার আপলোড করা ভিডিওসমূহ ১ মিনিটের বেশি হলে তবেই in-stream ads ব্যবহার করতে পারবেন।
মনে রাখবেন, কপিরাইট ভিডিও আপলোড করে আপনি কখনোই ফেসবুকে মনিটাইজেশন পেতে পারবেন না। তাই আপনাকে আপনাকে অন্যের কনটেন্ট কপি করার চিন্তা ভাবনা সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে ইউনিক কনটেন্ট তৈরিতে মন দিতে হবে।
ইন-স্ট্রিম অ্যাডস এর মাধ্যমে ইনকাম করার জন্য সবচেয়ে প্রথমে আপনাকে ফেসবুকের পার্টনার প্রোগ্রামে যোগ দিতে হবে।
এর জন্য আপনার ফেসবুক পেজে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন: আপনার পেইজে কমপক্ষে ১০,০০০ ফলোয়ার, ৬০,০০০ মিনিট ওয়াচ টাইম এবং ৫টি ভিডিও থাকতে হবে।
একবার আপনার পেইজে মনিটাইজেশন enable হয়ে গেলে আপনার ভিডিওগুলোতে ফেসবুকের দ্বারা বিজ্ঞাপন দেখানো হবে। প্রতিটি বিজ্ঞাপন দেখানোর বিনিময়ে আপনার একাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ জমা হতে থাকবে।
এই পদ্ধতিতে আয়ের জন্য আপনার ভিডিও আপলোডের ধারাবাহিকতা এবং ভিডিও কোয়ালিটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
3. Ads on Reels
রিলস ভিডিও বলতে ছোটো ছোটো ভিডিওগুলোকে বোঝানো হয়ে থাকে। এক মিনিটের কম সময়ের হওয়ার কারণে বর্তমানে টিকটকের পাশাপাশি ফেসবুক এবং ইউটিউবে এই ধরনের ভিডিওগুলোর প্রচুর জনপ্রিয়তা রয়েছে।
আপনি চাইলে ফেসবুকে ছোটো সাইজের রিলস ভিডিও বানিয়ে ইনকাম করতে পারবেন। বর্তমানে অনেকেই ফেসবুক থেকে রোজগারের রাস্তা হিসেবে এটি বেছে নিচ্ছেন।
আপনি জানলে অবাক হবেন যে, বাংলাদেশে অনেক ভিডিও কনটেন্ট ক্রিয়েটর আছেন যারা কেবল রিলস ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে আপলোড করে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছেন।
আপনিও যদি ফেসবুকে রিলস ভিডিও আপলোড করার কথা ভাবছেন, তাহলে আপনাকে দর্শকদের আকৃষ্ট করার জন্য ক্রিয়েটিভ এবং মানসম্মত রিলস তৈরি করতে হবে। বর্তমানে ট্রেন্ডিং টপিক ও বিনোদনমূলক ভিডিওগুলো লোকদের কাছে প্রচুর জনপ্রিয়।
যদি ভালো মানের ভিডিও দর্শকদের উপহার দিতে পারেন, তাহলে তারা আপনাকে পছন্দ করতে শুরু করবে এবং ধীরে ধীরে আপনার ফলোয়ার সংখ্যা বেড়ে যাবে।
আর ফলোয়ার সংখ্যা বেড়ে গেলে আপনি খুব সহজেই রিলস ভিডিওতে মনিটাইজেশন চালু করতে পারবেন এবং ইনকাম করা শুরু করে দিতে পারবেন।
মনে রাখবেন, একবার আপনি জনপ্রিয় হয়ে গেলে বিভিন্ন কোম্পানি বা ব্র্যান্ডগুলো আপনার রিলসে তাদের বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য আপনাকে বলতে পারেন এবং এভাবে স্পন্সরশিপের মাধ্যমে আপনি প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
4. Affiliate Marketing
বর্তমানে অধিকাংশ ব্লগার এবং ইউটিউব চ্যানেলের মালিকরা এফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্রচুর টাকা ইনকাম করে থাকেন।
আপনার ওয়েবসাইট, ব্লগ, ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ বা অন্য কোনো মাধ্যমে কোনো কোম্পানি বা ব্রান্ডের প্রোডাক্ট বিক্রি করে দেওয়ার প্রক্রিয়া হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং। এতে আপনি যে কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করে দিবেন সেই কোম্পানি প্রতিটি সেলসের বিনিময়ে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কমিশন হিসেবে দিয়ে দিবে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য মূলত প্রয়োজন হয় ভিজিটর বা অডিয়েন্স। তাই আপনি চাইলে ফেসবুকের মাধ্যমেও এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন, তবে এক্ষেত্রে আপনার প্রোফাইল বা পেজে প্রচুর ফলোয়ার থাকতে হবে।
যদি আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করার কথা ভাবছেন, তাহলে যে ধরনের পণ্য বা সার্ভিস এর প্রচার বা মার্কেটিং করতে চান, সেই অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট niche নির্বাচন করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, খেলাধূলা, ফ্যাশন, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য ইত্যাদি।
এরপর সেই নিশের ওপর একটি পেজ তৈরি করে আকর্ষণীয়, তথ্যপূর্ণ এবং উন্নতমানের কনটেন্ট আপনার পেজে পাবলিশ করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট যেমন পোস্ট, ভিডিও, স্টোরি, রিলস ইত্যাদি শেয়ার করতে পারেন।
আপনার পেজটিকে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন জায়গায় লোকদের সাথে শেয়ার করতে হবে, যাতে লোকেরা আপনার বিষয়ে জানতে পারে। মোটকথা আপনার ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য যাবতীয় সকল কাজ করতে হবে।
যখন আপনার হাজার হাজার ফলোয়ার হয়ে যাবে তখন বিভিন্ন এফিলিয়েট প্রোগ্রাম যেমন Amazon Associates, ClickBank, ShareASale ইত্যাদিতে রেজিস্টার করে বিভিন্ন প্রোডাক্টের এফিলিয়েট লিংক আপনার পোস্টে শেয়ার করতে পারবেন।
সেই লিংকের মাধ্যমে কেউ পণ্যটি কিনলে আপনি কমিশন ইনকাম করতে পারবেন।
5. Fan Subscription
ফ্যান সাবস্ক্রিপশন হলো ফেসবুক থেকে আয়ের আরেকটি জনপ্রিয় পদ্ধতি যার মাধ্যমে ক্রিয়েটররা তাদের দর্শকদের প্রিমিয়াম কনটেন্ট অফার করতে পারেন। অর্থাৎ দর্শকরা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পে করে এই ধরনের কনটেন্টগুলো অ্যাক্সেস করে থাকেন।
এই পদ্ধতিতে ইনকাম করার জন্য আপনাকে প্রথমে একটি ফেসবুক পেজ বানাতে হবে। অবশ্যই নির্দিষ্ট একটি নিশের ওপর আপনার পেইজটি বানাতে হবে।
এরপর আপনার পেইজে high quality কনটেন্ট পাবলিশ করে followers বৃদ্ধি করতে হবে। ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রমোশনাল কৌশল ব্যবহার করতে পারেন। যেমন: আপনার দর্শকদের বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের গিভওয়ে দিতে পারেন।
তারপর সেটিংস থেকে Fan Subscription অপশনটি চালু করতে হবে।
এরপর দর্শকরা আপনার অফার করা পেইড কনটেন্টগুলো অ্যাক্সেস করতে পারবেন।
এই পদ্ধতিতে রোজগারের জন্য আপনার ফলোয়ারদের এমন সব আকর্ষণীয় কনটেন্ট উপহার দিতে হবে যেন তারা আপনার দেওয়া পেইড কনটেন্ট গুলো নিতে আগ্রহী হন।
ফ্যানদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করতে হবে এবং তাদের সাবস্ক্রাইব করতে অণুপ্রাণিত করতে হবে।
6. Facebook Marketplace
আপনি চাইলে ফেসবুক মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে অনলাইনে ব্যবসা করে ইনকাম করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে আলাদা কোনো বিজনেস ওয়েবসাইট বানানোর দরকার হবে না।
নতুন এবং পুরাতন যেকোনো পণ্য আপনি ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে লিস্টিং করতে পারবেন এবং বিক্রি করতে পারবেন।
ফেসবুক যেহেতু বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এবং কোটি কোটি মানুষ প্রতিদিন এটা ব্যবহার করে থাকে, তাই এখানে খুব সহজেই ক্রেতা পাওয়া সম্ভব।
ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে কোনো প্রোডাক্ট বিক্রি করার জন্য প্রথমে আপনাকে আপনার ফেসবুক একাউন্টে লগিন করতে হবে। এরপর মার্কেটপ্লেসে গিয়ে “Create New Listing” অপশনে ক্লিক করতে হবে। এখানে আপনার পণ্যের বিস্তারিত তথ্য এবং ছবি যোগ করে পোস্ট করতে পারবেন।
আপনার পণ্যের ডেসক্রিপশন আকর্ষণীয় করে লিখুন। কেননা এটি ক্রেতাকে পণ্যটি কিনতে আগ্রহী করে তোলে।
এরপর যখন কোনো ক্রেতা আপনার থেকে পণ্যটি কিনতে চাইবেন, তখন সে সরাসরি আপনার সাথে মেসেজের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবেন।
এভাবে আপনি বিনা খরচে ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে প্রোডাক্ট বিক্রি করে ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
7. Website Traffic
আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ রয়েছে তাহলে আপনি গুগল সার্চ ইঞ্জিনের পাশাপাশি ফেসবুক থেকে ট্রাফিক নিতে পারবেন।
এর মাধ্যমে আপনার গুগল এডসেন্স এর ইনকাম বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
বর্তমানে অনলাইন থেকে ঘরে বসে ইনকাম করার সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং লাভজনক উপায় হলো ব্লগিং। আর ব্লগিং এর মাধ্যমে অনলাইন ইনকামের মূল উপাদান হলো ওয়েবসাইট ট্রাফিক।
ট্রাফিক বা ভিজিটর পাওয়ার জন্য বেশিরভাগ ব্লগার সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে থাকেন এবং সার্চ ইঞ্জিনের জন্য তাদের ওয়েবসাইটকে অপ্টিমাইজ করে থাকেন।
সঠিক এসইও টেকনিক ব্যবহার করলে সার্চ ইঞ্জিন থেকে ওয়েবসাইটে প্রচুর অর্গানিক ভিজিটর আনা সম্ভব।
তবে বর্তমানে অনেকেই তাদের ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনার জন্য সার্চ ইঞ্জিনগুলোর পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করছেন।
ফেসবুক পেইজ বা ফেসবুক গ্রুপে ওয়েবসাইটের কনটেন্ট গুলো শেয়ার করে প্রচুর পরিমাণে সোশ্যাল ট্রাফিক পাওয়া সম্ভব।
আপনিও আপনার ওয়েবসাইটের একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করতে পারেন এবং সেখানে আপনার ওয়েবসাইট শেয়ার করতে পারেন। অথবা আপনার ওয়েবসাইটের নিশ রিলেটেড বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে আপনার কনটেন্ট শেয়ার করেও ভালো ট্রাফিক নিতে পারেন।
এভাবে আপনি ওয়েবসাইট থেকে আয়ের পরিমাণ বাড়াতে পারবেন।
8. Start Your Own Business
আজকাল অনেকেই ফেসবুকের মাধ্যমে বিজনেস করে ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করছেন। আপনিও চাইলে ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার নিজস্ব ব্যবসা স্টার্ট করতে পারেন।
অনলাইনে বিজনেস শুরু করার জন্য প্রচুর লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, টি-শার্ট বিজনেস, কাপড়ের ব্যবসা, ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র বিক্রয় ইত্যাদি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
আজকাল অনলাইন বিজনেসগুলো প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। কেননা এতে অনলাইনের মাধ্যমে কম সময়ে এবং কম পরিশ্রমে হাজার হাজার মানুষের নিকট নিজের প্রোডাক্ট বা পণ্যের মার্কেটিং করা যায় এবং ক্রেতারা বাড়িতে বসে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অর্ডার করতে পারেন।
ফেসবুকে নিজের ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রথমে আপনাকে ব্যবসার নাম অনুসারে একটি ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ খুলতে হবে। এরপর আপনার পেইজে ফলোয়ার বাড়াতে হবে অথবা গ্রুপে প্রচুর পরিমাণে মেম্বার যুক্ত করতে হবে।
তারপরে ধীরে ধীরে আপনি তাদের সামনে আপনার ব্যবসার প্রোমোশন করতে পারবেন।
আপনি চাইলে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস ব্যবহার করেও আপনার বিজনেস পরিচালনা করতে পারেন।
এছাড়া নিজের ইকমার্স ওয়েবসাইট বানিয়ে ফেসবুকে সেই ওয়েবসাইটের মার্কেটিং বা প্রোমোশন করতে পারেন।
9. Earn Money as a Group Admin
আপনি যদি সঠিক প্লান বা পরিকল্পনা করে একটি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করেন এবং সেখানে সদস্য সংখ্যা বাড়াতে পারেন, তাহলে সেখান থেকেও আপনি ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
একজন গ্রুপ এডমিন হিসেবে ইনকাম করার জন্য আপনাকে অবশ্যই সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনাকে টেকনোলোজি, ব্লগিং বা ওয়েবসাইট, গেমিং এই ধরনের গ্রুপগুলো তৈরি করতে হবে, যেখানে ভবিষ্যতে লোকেরা ডিজিটাল প্রোডাক্ট ক্রয় বিক্রয় করতে পারবেন।
তবে আপনি যে বিষয়ে গ্রুপ বানাবেন সে বিষয়ে অবশ্যই আপনাকে অভিজ্ঞ হতে হবে।
আসুন একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছি। মনে করুন আপনি ব্লগিং এবং ওয়েবসাইট এর বিষয়ে ভালো জানেন। তাহলে আপনাকে ব্লগিং এবং ওয়েবসাইটের সাথে জড়িত নাম দিয়ে একটি গ্রুপ তৈরি করতে হবে এবং সেখানে এমন সব লোকদের যুক্ত করতে হবে যারা ব্লগিং এর ওয়েবসাইটের কাজ জানেন এবং করেন।
তারপরে আপনাকে সকলের পরিচিতি অর্জন করার চেষ্টা করতে হবে। যখন আপনার গ্রুপে অনেক মেম্বার হয়ে যাবে তখন তারা একে অপরের সাথে ওয়েবসাইট, এডসেন্স একাউন্ট ইত্যাদি ক্রয় বিক্রয় করতে আগ্রহী হবেন।
যখন তারা পরস্পরের সাথে ডিল করবেন, তখন দরকার হবে একজন বিশ্বস্ত লোকের, যার মাধ্যমে তারা ডিলটি সম্পন্ন করবেন।
এরপর আপনি তাদের ডিলটি সম্পন্ন করে দিয়ে ডিল চার্জ হিসেবে কিছু টাকা নিতে পারবেন।
এভাবে প্রতিটি ডিলের জন্য আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা তাদের কাছ থেকে চার্জ হিসেবে নিতে পারবেন। দিন দিন যত বেশি ডিল আপনার দ্বারা করা হবে, তত বেশি ইনকাম আপনার হবে।
10. Publish Articles And News on Facebook
ফেসবুক পেজ অথবা গ্রুপ খুলে সেখানে লেখালেখি করেও আপনি অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন।
যখন আপনার লেখা লোকেরা অধিক পছন্দ করবে এবং আপনার পেইজে ফলোয়ার সংখ্যা বেড়ে যাবে তখন ফেসবুক ইন-আর্টিকেল অ্যাডস, এফিলিয়েট মার্কেটিং, স্পনসর কনটেন্ট ইত্যাদি উপায়ে ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
ফেসবুকে লেখালেখি করে ইনকাম করার পদ্ধতির বিষয়ে আমার আগের আর্টিকেলটি আপনি পড়তে পারেন।
11. Course Selling
আপনি কি একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে এক্সপার্ট? ভিডিও টিউটোরিয়ালের মাধ্যমে সেই বিষয়টি অন্যদের ভালো শেখাতে পারেন? তাহলে ফেসবুকের মাধ্যমে আপনি অনলাইন কোর্স বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন।
ফেসবুকে অনলাইন কোর্স বিক্রি করার জন্য প্রথমে আপনাকে কোর্স বানাতে হবে। মনে রাখবেন, অবশ্যই আপনার কোর্সের কোয়ালিটি ভালো হতে হবে। তাছাড়া এই ক্ষেত্রে আপনি খুব বেশিদিন টিকতে পারবেন না।
আমরা এটা সকলেই জানি যে বর্তমানে যেকোনো বিষয়ে ইউটিউবে সার্চ করলে ভিডিও টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়। আপনার শেখানোর পদ্ধতি অবশ্যই সেসব ফ্রি টিউটরিয়ালের থেকে উন্নত হতে হবে।
যেহেতু মানুষ আপনার কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে আপনার কাছ থেকে ক্রয় করবে সেহেতু আপনাকে তাদের ভালো কিছু উপহার দিতে হবে।
সবচেয়ে প্রথমে ভালো মানের অনলাইন কোর্স তৈরি ক্রুন এবং তারপর ফেসবুকের মাধ্যমে তার মার্কেটিং কার্যক্রম শুরু করুন।
12. Offer Online Services
আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে জড়িত কাজগুলো করতে পারেন তাহলে ফেসবুকের মাধ্যমে আপনি ক্লায়েন্ট খুঁজতে পারবেন।
ফেসবুকে আপনি লোকদের যেসকল সার্ভিস বা পরিষেবা অফার করতে পারেন সেগুলো হলো গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ওয়েবসাইট ডিজাইন, মোবাইল অ্যাপ তৈরি, কনটেন্ট রাইটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন ইত্যাদি।
এই ধরনের কাজগুলো সাধারণত ফ্রিল্যান্সাররা মার্কেটপ্লেসে ক্লায়েন্টদের অফার করে থাকেন।
তবে আপনি চাইলেও ফেসবুকের মাধ্যমেও লোকদের এইসকল কাজ করে দিতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনি যে কাজটি করবেন সেই কাজের বিষয়ে অবশ্যই ভালো অভিজ্ঞতা আপনার থাকতে হবে।
যদি একবার মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে উঠতে পারেন তাহলে কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার কোনো অসুবিধায় পড়তে হবে না।
FAQ’s
ফেসবুক থেকে অর্থ আয়ের অনেক পদ্ধতি রয়েছে। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো ভিডিওতে এডস দেখিয়ে ইনকাম অর্থাৎ ইন-স্ট্রিম এডস, রিলস এডস, ফেসবুক স্টার প্রোগ্রাম, এফিলিয়েট মার্কেটিং ইত্যাদি।
এটা নির্ভর করে আপনি কোন মনিটাইজেশন সিস্টেমটি ব্যবহার করবেন তার উপর। তবে সাধারণত ফেসবুক পেইজে ১০ হাজার ফলোয়ার হলেই টাকা ইনকাম করা শুরু করা যায়। বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন – ফেসবুকে কত ফলোয়ার হলে টাকা পাওয়া যায়?
ফেসবুক থেকে ইনকামের টাকা আপনি সরাসরি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বা এটিএম কার্ড এর মাধ্যমে পারবেন।
কোনো ক্রিয়েটর লাইভ স্ট্রিমিং করার সময় তা দর্শকরা তাকে স্টার পাঠাতে পারেন। প্রতিটি স্টারের বিনিময়ে একজন ক্রিয়েটর নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার বা টাকা পেয়ে থাকেন
ভিডিও আপলোড করে ফেসবুক থেকে কত টাকা আয় করা যায় তার সঠিক পরিমাণ বলা কঠিন। যত বেশি ভিউস আপনার ভিডিওতে আসবে, তত বেশি ইনকাম আপনার হবে।
আমাদের শেষ কথা
তাহলে বন্ধুরা, আজকের আর্টিকেলে ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার সেরা উপায়গুলো নিয়ে আমি বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
বিশ্বজুরে হাজার হাজার লোকেরা এসব উপায়ে ফেসবুক থেকে টাকা রোজগার করছেন।
তবে ফেসকের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায়গুলো হলো In-stream ads, ads on reels, facebook star, facebook marketplace ইত্যাদি।
আমাদের দেশের লাখ লাখ মানুষ ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে ফেসবুকে আপলোড করে উপরে বলা উপায়গুলোর সাহায্যে প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করছেন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করবেন। আর আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাবেন।
Wonderful❤️
Thanks.